বিকেএসপিতে ভর্তি তথ্য
১৯৮৬ সালের ১৪ই এপ্রিল ১১৫ একর জায়গা নিয়ে ঢাকার সাভারের জিরাবোতে আনুষ্ঠানিকভাবে পথচলা শুরু করে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) । এই প্রতিষ্ঠানের একমাত্র উদ্দেশ্যে দেশের জন্য আন্তর্জাতিকমানের ক্রীড়াবিদ তৈরি করা। শুধু তাই নয় এর পাশাপাশি এখানে পড়াশোনাটাও সমানভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়। বর্তমানে খুলনা, দিনাজপুর, বরিশাল ও চট্টগ্রামে একটি করে আঞ্চলিক কেন্দ্র রয়েছে। আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলোতেও পড়াশোনা ও খেলাধুলার সুযোগ রয়েছে।
ঠিকানা ও যোগাযোগ: জিরোবা, সাভার। ফোন: ৭৭০১২১৫-৬ ফ্যাক্স: ৭৭০১৫১৩ ই-মেইল: [email protected]
ভর্তি প্রক্রিয়া: বর্তমানে বিকেএসপি প্রধান কেন্দ্র ও আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলোতে মোট ১৭টি খেলা শেখার ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে সাধারণত ৪র্থ, ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণিতে আসন খালি থাকা সাপেক্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। প্রতিবছর পত্রিকায় ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। সম্পূর্ণ আবাসিক ব্যবস্থায় চলে পড়াশোনা ও খেলাধুলার নিবিড় পরিচর্যা। ভর্তির জন্য প্রথমে আবেদনপত্র সংগ্রহ করে সেটি যথাযথভাবে পূরণ করে জমা দিতে হয়। এরপর আবেদনপত্র থেকে বাছাই করা শিক্ষার্থীদের ডাকা হয় নির্ধারিত দিনে। মূলত দেখা হয় তার খেলার যোগ্যতা। ভালো শিক্ষার্থীদের বাছাই করে মেডিকেল চেকআপের পর ভর্তি করিয়ে নেওয়া হয় বিকেএসপিতে। ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারে। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও ডিগ্রি পড়ার সুযোগ রয়েছে এখানে। মূলধারার পাঠ্যবই পড়েই একাডেমিক পরীক্ষায় বসতে হয় শিক্ষার্থীদের। সম্পূর্ণ আবাসিক এই প্রতিষ্ঠানে ছেলেদের জন্য চারটি হোস্টেল ও মেয়েদের জন্য রয়েছে একটি হোস্টেল। ভর্তি হতে সর্বমোট ২০ হাজার টাকার মতো লাগে। আছে মাসিক বেতন। তবে এটা নির্ভর করে অভিভাবকের আয়ের ওপর। প্রতিবছর একেকটি খেলায় যে কয়টি আসন খালি হয়, তার বিপরীতেই শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হয়।
প্রাথমিক বাছাই: ঢাকা বিকেএসপিতে প্রাথমিক বাছাইয়ের দিন ০২ কপি রঙ্গিন ছবি (পাসপোর্ট সাইজ) সঙ্গে আনতে হয়। প্রাথমিক বাছাইয়ের দিন ঢাকা বিকেএসপি হতে নিবন্ধন ফরম পূরণ পূর্বক পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে হয়। ডাক্তারী পরীক্ষা (বয়স নির্ধারণ ও অন্যান্য মেডিকেল টেষ্ট)।
শারীরিক যোগ্যতা বা ফিটনেস টেষ্ট: স্ব-স্ব খেলা/বিভাগ অনুযায়ী ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। প্রাথমিক বাছাইয়ের দিন ক্রীড়া সরঞ্জামাদি ও পোশাক সাথে আনতে হয়।
চূড়ান্ত নির্বাচন: কেবলমাত্র প্রাথমিকভাবে বাছাইকৃত খেলোয়াড়দের নিয়ে ০৫ দিনের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প আয়োজন করা হয়। প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে স্ব-স্ব ক্রীড়া বিভাগের ব্যবহারিক পরীক্ষা গ্রহন করা হয়। সর্বশেষ অধ্যায়নরত শ্রেণীর সিলেবাস অনুযায়ী স্ব-স্ব শ্রেণির লিখিত পরীক্ষা (বাংলা, ইংরেজি ও গণিত) গ্রহন করা হয়। ক্রীড়া বিজ্ঞান সংক্রান্ত ব্যবহারিক পরীক্ষা গ্রহন করা হয়। সকল পরীক্ষার সমন্বিত ফলাফলের ভিত্তিতে চূড়ান্ত নির্বাচন করা হয়।
সুবিধাদি: প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বিদেশে প্রশিক্ষণ, অভ্যন্তরীণ ক্লাব, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলার সুযোগ রয়েছে। কৃতি প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য বিশেষ সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে। শিক্ষা বোর্ডের সিলেবাস অনুযায়ী সাধারণ শিক্ষা, সম্পূর্ণ আবাসিক পরিবেশে সুশৃঙ্খল জীবন যাপন, পুষ্টিকর খাবার ও নৈতিক শিক্ষার সু-ব্যবস্থা।
রুটিন: সপ্তাহে ছয় দিন প্র্যাকটিস ও একাডেমিক পড়াশোনা করতে হয়। সপ্তাহে তিন দিন সকালে এক ঘন্টা খেলার প্র্যাকটিস শেষে সকাল ১০:০০ টা থেকে দুপুর ১:৩০ টা পরযন্ত একাডেমিক পড়াশোনা। বিকাল ৩:৩০ টা পর্যন্ত খাওয়া-দাওয়া ও বিশ্রাম। অতঃপর সন্ধ্যা অবধি প্র্যাকটিস। রাতে একাডেমিক পড়াশোনা। সকাল ও বিকেলের প্র্যাকটিসের সময় শীত ও গ্রীষ্মভেদে কিছুটা পরিবর্তন হয়ে থাকে। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি।
প্রতিভা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা: সারা বছরই সারা দেশ জুড়ে প্রতিভা অন্বেষণের আয়োজন করে থাকে বিকেএসপি। বিভিন্ন খেলায় যারা খুব ভালো, জেলা পর্যায়ে বাছাই করা হয় তাদের। এরপর তাদের এক মাস, দুই মাস, তিন মাস নানা ধরনের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের মাধ্যমে বাছাই করা হয়। এরপর এদের ভর্তি করে নেওয়া হয় বিকেএসপিতে। তথ্যসূত্রঃইনফোপিডিয়া