বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে সরকার গঠিত মেডিকেল বোর্ডের বক্তব্য স্ববিরোধী ও সরকারের চিন্তারই প্রতিফলন বলে দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা বারবার বলে এসেছি- অবৈধ আওয়ামী সরকার ও সরকার প্রধান সুপরিকল্পিতভাবে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা না দিয়ে তাঁর অসুস্থতা চরম শোচনীয় অবস্থায় উপনীত করার চক্রান্ত চালিয়ে আসছে।’
সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘সরকারি দলের অনুগত চিকিৎসকদের দিয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড কারাগারে ২০ মিনিটে তথাকথিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিএসএমএমইউ-তেই ভর্তির পরামর্শ দিয়েছেন। অর্থাৎ আমরা পূর্বেই বলেছিলাম-দেশনেত্রীর স্বাস্থ্য নিয়ে সরকার দলের অনুগত বোর্ড সদস্যরা সরকারের পছন্দানুযায়ী পরামর্শ দেবেন-সেটিই প্রমাণিত হলো।’
‘বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ নয়, কোনো আশঙ্কা নেই’- মেডিকেল বোর্ডের এমন বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘দেশনেত্রীর স্বাস্থ্য যদি ঝুঁকিপূর্ণ না হয় তাহলে অন্যের সাহায্য ছাড়া তিনি এপাশ-ওপাশ হতে পারেন না কেন? একথা তো মেডিকেল বোর্ডই স্বীকার করেছে। দেশনেত্রীর অসুস্থতা নিয়ে মেডিকেল বোর্ডের বক্তব্য স্ববিরোধী ও সরকারের চিন্তারই প্রতিফলন।’
রিজভী বলেন, ‘সরকারি মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ একদেশদর্শী ও সার্বজনীন চিকিৎসানীতির পরিপন্থী। একজন রোগীকে তার পছন্দ অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া উচিত, এটি তার মানবাধিকার। সেটি না করে কর্তৃপক্ষ জোর করে নিজেদের পছন্দের চিকিৎসকদের দিয়ে দেশনেত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো চরম প্রতিহিংসাপরায়ণ জেদেরই বহিঃপ্রকাশ।’
বেগম খালেদা জিয়াকে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে নিয়ে যাওয়ার জন্যই সরকারের ইচ্ছা অনুযায়ী মেডিকেল বোর্ড ‘ম্যানুফ্যাকচারিং প্রতিবেদন’ দিয়েছে, আর সেজন্যই বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদেরকে বোর্ডে অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি বলেও দাবি করেন রিজভী।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতারের পাশাপাশি আটকের পর তা অস্বীকার ও গুম করে দেয়ার ঘটনায় সারাদেশে বিরাজ করছে এক ভয়াল আতঙ্কজনক পরিবেশ। নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনীকে আটক এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি স্বীকার না করার ঘটনা বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর বর্তমান অত্যাচারী শাসকগোষ্ঠীর চলমান নিষ্ঠুর কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, কর্নেল (অবঃ) আব্দুল লতিফ, কৃষক দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তকদির হোসেন মো. জসিম, বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন প্রমুখ।