বিএনপির মনোনয়নে আইএসআই (পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা) ভূমিকা রেখেছে- এমন কথা বলে সরকার অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সরকারের এই অপপ্রচারের প্রমাণ নেই এবং সত্যের লেশমাত্র নেই বলেও উল্লেখ করেন রিজভী।
রিজভী বলেন, একতরফা নির্বাচন করতেই আওয়ামী লীগ আদালতের ঘাড়ে বন্ধুক রেখে বিএনপির প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিল করছে।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নেয়া আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এমন ২২ জনের নাম চিহ্নিত করেছে বিএনপি।
আজ নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগের দাবি ও তাদের অতীত সম্পর্কে তুলে ধরেন তিনি।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন সময় বক্তৃতায় বলেছেন- আওয়ামী লীগে রাজাকার থাকলে দেখিয়ে দেন, আমরা তাদের বিচার করবো। আওয়ামী লীগের ২৩ জন যুদ্ধাপরাধী বা তাদের পরিবার কোন না কোনভাবে ৭১ সালে পাকিস্তান সরকার ও যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের এসব নেতা ঘৃণিত ভূমিকা পালন করেছেন। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতেতে সক্রিয় থেকে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বনে গিয়েছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্বাদের হত্যাসহ নানা ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তারা।
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত যুদ্বাপরাধী ও যুদ্বাপরাধী পরিবারের সন্তানদের মধ্যে রয়েছেন- ঢাকায় প্রথম যার নেতৃত্বেই শান্তি কমিটি গঠন করা হয় সেই নেজামে ইসলামি পাটির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক হাকিম হাফেজ আজিজুল ইসলামের ভাই ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য ও আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান আর্মিতে কর্মরত পর্যটন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা লে. কর্ণেল (অব) ফারুক খান, ফরিদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেয়াই ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক এমপি ময়মনসিংহের এডভোকেট মোসলেম উদ্দিন, আওয়ামী লীগের সেকেন্ড ইন কমান্ড সংসদ উপনেতা ও ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, গোপালগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ছেলের শ^শুর মুসা বিন শমসের, জামালপুর–-৩ আসনের সংসদ সদস্য যুবলীগের লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সরকার দলীয় হুইপ মির্জা গোলাম আযমের বাবা মির্জা গোলাম কাশেম, রংপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক এইচএন আশিকুর রহমান, চাদপুর-১ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর, জামালপুরের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মাওলানা নুরুল ইসলাম, কোটালীপাড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান, গোপালগঞ্জ কোটালীপাড়া উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী রাফেজা বেগমের ভাই আজিজুল হক, আওয়ামী লীগ নেতা ও গোপালগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আবুল কালাম দাড়িয়ার বাবা মালেক দাড়িয়া, গোপালগঞ্জ কোটারিপাড়া উপজেলা শ্রমিকলীগ সভাপতি আমির হোসেনের পিতা মোহন মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া দাড়িয়ার বাবা মুন্সি রজ্জব আলী দাড়িয়া, কোটালিপাড়া পৌর মেয়র ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এইচএম অহেদুল ইসলামের ভগ্নিপতি রেজাউল হাওলাদার, কোটালিপাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌর মেয়র এইচএম অহেদুল ইসলামের পিতা বাহাদুর হাজরা, গোপালগঞ্জের এপিপি ও আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদার, এডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদারের পিতা হাসেম সরদার ও জামালপুর বকশিগঞ্জ আওয়ামী লীগ সভাপতি অবুল কালাম আজাদের পিতা আবদুল কাইয়ুম মুন্সী প্রমূখ। অভিযুক্তদের ব্যাপারে তিনি দায়েরকৃত মামলা ও নানা বইপুস্তকের রেফারেন্স দেন রিজভী।
রিজভী বলেন, জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত কুৎসা, ঘৃন্য অপপ্রচারের ধারাবাহিকতা এখনও অব্যাহত আছে। আইএসআই নাকি বিএনপি’র মনোনয়নে ভূমিকা রেখেছে। এটি ডাহা মিথ্যাই নয়, নোংরা অপপ্রচার।