রাজধানীর বনানীতে এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলার পলাতক আসামি রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলীকে খানকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ মামলায় ইতিমধ্যে এস এম এইচ আই ফারুক ও তাসভির উল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ রোববার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের এমন ঘটনা প্রকৃত অর্থে কে ঘটালো, কারা দায়ী বা কাদের গাফিলতি ছিল-এগুলোর বিশ্লেষণ কখনো হয় না। এসব বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে কী কী ব্যবস্থা ও উপকরণ থাকা উচিত-এ প্র্যাকটিস অনেক ক্ষেত্রেই নেই।’
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘রাজউক, মালিকপক্ষ এবং ডেভেলপার কোম্পানিদের মধ্যে কার কী ভূমিকা ছিল দেখা হবে। সকল অপরাধগুলো পর্যালোচনা করে তদন্ত শেষে তাদের গাফিলতি ও অপরাধ চিহ্নিত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।’
আব্দুল বাতেন আরও বলেন, ‘ভবন নির্মাণের আগে ও পরে কার কী ভূমিকা ছিল সেসব আমরা তুলে ধরব। প্রত্যেকটা বিষয় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করা হবে যেন কেউ পার পেয়ে না যেতে পারে। একটি ভবন নির্মাণে কী কী নীতিমালা রয়েছে সেগুলো রাজউকের পক্ষ থেকে নজরদারি করে। যে এই ইন্সপেকশান করে তার দায়-দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি, যে নিয়ম মেনে সেটি করা হয়েছিল কি না। এ ছাড়া, ফায়ার সেফটির বিষয়গুলোতে ফায়ার সার্ভিসের কাছ থেকে ছাড়পত্র নিতে হয়। এ ভবনে কী কী ব্যত্যয় ছিল, সেসব শনাক্ত করা হবে।’
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘সাধারণত একটি ভবন ব্যবহার উপযোগী করে ডেভেলপার কোম্পানি হস্তান্তর করে থাকে। এফ আর টাওয়ারের ক্ষেত্রে ডেভেলপার কোম্পানি রূপায়ন অন্য মালিকদের রেজিস্ট্রেশন করে বুঝিয়ে দেয়নি। এ ক্ষেত্রে ভবনে রূপায়নেরও মালিকানা রয়েছে।’
অনুমোদন ও নজরদারিতে রাজউকের গাফিলতি থাকতে পারে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ না আনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রাজউকের কার্যক্রমটি তার অথোরিটি নিশ্চিত করবে। কেউ নিয়ম বহির্ভূত কোনো কাজ করলে তাদের বিরুদ্ধে দাপ্তরিক ব্যবস্থা নিবে। তবে কেউ সরাসরি ক্রিমিনাল অফেন্সে জড়িত থাকলে তদন্তে যদি তাদের নাম আসে, তাহলে তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।’
মামলার তদন্তে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না জানিয়ে ডিবির ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা বলেন, ‘তদন্তে অপরাধ অনুযায়ী সবাইকেই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এখানে ভবন ভেঙে পড়েনি, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তাই ভবনে অগ্নিকাণ্ড ব্যবস্থাপনায় কী কী ঘাটতি ছিল, সেসব বিষয়গুলো বিবেচনায় আনা হবে।’