আগামী ২৩ নভেম্বর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুবলীগের কাউন্সিল অধিবেশন। এর আগে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হবে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, যুবলীগের এবারের কমিটি গঠনে সংগঠনের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার এবং টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে নেতাকর্মীদের দূরে রাখার লক্ষ্যকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ৬০-৭০ বছর বয়সী নেতাদের বাদ দিয়ে অনূর্ধ্ব ৪০-৪৫ বছর বয়সীদের নেতৃত্বে আনার বিষয়টিও ভাবছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। তবে পুরনোদের ঢালাওভাবে বাদ দিয়ে তরুণদের মূল্যায়ন করা হলে সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় অনেক নেতা।
এসব নেতারা বলেন, ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে যুবলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন-এমন সব নেতাকে বাদ দিয়ে নতুনদের দায়িত্ব দেওয়া হলে সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে পুরনোদের ঢালাওভাবে বাদ দিয়ে তরুণদের মূল্যায়ন করা হলে সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় অনেক নেতা। ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে যুবলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন-এমন সব নেতাকে বাদ দিয়ে নতুনদের দায়িত্ব দেওয়া হলে সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এদিকে, ক্যাসিনো কারবার, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে থাকা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের শীর্ষ নেতৃত্বের ওপর নাখোশ প্রধানমন্ত্রী। সাম্প্রতিক নানা ঘটনা ও বিভিন্ন সময় দেওয়া বক্তব্যে তাঁর সেই মনোভাব প্রতিফলিত হয়েছে। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের পর এখন পর্যন্ত দলীয় প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেননি যুবলীগের বর্তমান চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। এ ব্যাপারে তিনি চেষ্টাও করেছেন অনেকবার। তবে তাতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।
এসব ঘটনায় উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দলের নেতাকর্মী তো বটেই, সাধারণ মানুষও মনে করছেন, ওমর ফারুকসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা নিষিদ্ধ হয়েছেন গণভবনে। কোনো কোনো গণমাধ্যম এমন খবর প্রকাশও করেছে। কিন্তু সত্যিই কী তাই?
কালের কণ্ঠ থেকে চেষ্টা করা হয়েছে খবরের সত্যতা যাচাইয়ের। তবে এখন পর্যন্ত বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
জানা গেছে, যুবলীগের ৭ম জাতীয় কংগ্রেস সামনে রেখে সংগঠনটির নেতাদের সঙ্গে বসছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৩ অক্টোবর বিকেলে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন যুবলীগের শীর্ষ নেতারা। তবে এ বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন না সংগঠনটির চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী।
সংগঠনটির কয়েকজন নেতা জানান, ক্যাসিনোকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠায় যুবলীগ চেয়ারম্যানের গণভবনে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে বৈঠকের শিডিউল আনতে যাওয়া এক নেতাকে সরকার প্রধান সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যুবলীগের বিতর্কিতরা যেন গণভবনের অনুষ্ঠেয় ওই বৈঠকে না থাকে। এ কারণে যুবলীগের শীর্ষ নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলেও যেতে পারছেন না ওমর ফারুক চৌধুরী।
গণভবনে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে কারা উপস্থিত থাকবেন, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বুধবার বৈঠকে বসেছিলেন যুবলীগের শীর্ষ নেতারা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যুবলীগের যাদের বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে, শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী তাদেরকে ছাড়াই কংগ্রেসের আগে অনুষ্ঠেয় এই জরুরি বৈঠক হবে। যুবলীগের চেয়ারম্যান ছাড়াও সংগঠনের একজন প্রভাবশালী প্রেসিডিয়াম সদস্যের ( যিনি ভোলার সংসদ সদস্য) বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু হওয়ায় তাঁকেও বৈঠক থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে যুবলীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ বলেন, রবিবার আমাদেরকে দেখা করার সময় দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে ওমর ফারুক চৌধুরী ও নুরুন্নবী শাওনকে না রাখার বিষয়ে কোনো নির্দেশনার কথা আমাকে বলেননি। এদিকে গত কয়েকদিন ধরে সংগঠনের কার্যক্রম থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন চেয়ারম্যান মহোদয়। আমার মনে হয় তিনি নিজেই যাবেন না আমাদের সঙ্গে।