সমাবেশ করতে আর কখনও বিএনপি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুমতি চাইবে না বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ‘আমাদের এই সমাবেশ আজকে সকাল ১০টার সময় অনুমতি দিয়েছে আর বলেছে শুধু আজকের জন্য (অনুমতি)। কিন্তু এরপরে আর কখনও আমরা (বিএনপি) অনুমতি নিবো না। আমরা আমাদের যখন খুশি তখন সমাবেশ করবো। এটা আমাদের অধিকার, সংবিধান অনুযায়ী অধিকার। তাই সকলকে দল-মত নির্বিশেষে সামনের দিনগুলোতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে।’
রবিবার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের সামনে একটাই লক্ষ্য যে, গণতন্ত্রের প্রতীক দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি করা এবং স্বৈরশাসকের পতন ঘটানো। এই সরকার জনগণের নির্বাচিত সরকার না। সুতরাং তারা অবৈধভাবে জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। জনগণের সমর্থনে নয়। দেশে গণতন্ত্র, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম সেই গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রয়োজন হলে আবার বুকের রক্ত দিব।’
সরকারকে ব্যর্থ দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার সব কিছুতে ব্যর্থ হয়েছে, এমনকি বাংলাদেশ নামক যে একটা রাষ্ট্র এই রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে ব্যর্থে পরিণত করেছে। তারা হাজার হাজার পুলিশ নিয়োগ দিচ্ছে কিন্তু দেশে কোন ছিনতাই-রাহাজানি কমছে না। তারা সড়ক নিয়ে আইন করেছে অথচ রাস্তায় প্রতিদিনই মানুষ এক্সিডেন্ট করে মারা যাচ্ছে।’
‘আজকে ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, শেয়ার মার্কেট লুট করে নিয়েছে, ব্যাংক চলছে না। বিচার বিভাগ স্বাধীন নয় দলীয়করণ করে নিয়েছে। আজকে মিডিয়াকেও দখল করে নিয়েছে। সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রেখে তারা আজকে সরকার চালাতে চায়, দেশ চালাতে চায়।সুতরাং আমাদের দেশকে যদি রক্ষা করতে হয় নিজেদেরকে রক্ষা করতে হয় তাহলে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
বিএনপি পাগল রিজভী হাওলাদারের মৃত্যুতে ফখরুল শোক জানিয়ে বলেন, ‘আমাদেরকর্মী বিএনপির নিবেদিতপ্রাণ তিনি সবসময় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে সবসময়ই আমাদের এই কার্যালয়ে থাকতেন সেই রিজভী অনশন করা অবস্থায় গতকাল কার্যালয় মারা গেছেন।তাকে সবসময়ই কার্যালয়ে দেখতাম বুকের মধ্যে ‘গণতন্ত্রের মায়ের মুক্তি চাই’ লেখাটা লিখে রাখতেন। তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি ও তার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস-চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, এজেডএম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, আব্দুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ বক্তব্য দেন।