সাংবাদিকতা এমন একটি পেশা যাদের মুখে ভাষা নেই তাদেরকে ভাষা দিতে পারে। যার কাছে ক্ষমতা নেই তাকে ক্ষমতাবান করতে পারেন। যে প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না, তাকে প্রতিবাদ করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। সুতরাং এই দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্যই গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয়।
বুধবার ( ২৭ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি(ডিআরইউ) আয়োজিত বেস্ট রিপোর্টিং পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিতির বক্তৃাতায় একথা বলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, সমাজের অসঙ্গতি তুলে ধরার ক্ষেত্রে, দায়িত্বশীলদের কোথায় দায়িত্ব পালন করা দরকার সেটা তুলে ধরতে ভালো রিপোর্টিং অত্যন্ত সহায়ক হয়। আপনারা সত্য বিষয়কে তুলে ধরার চেষ্টা করবেন সবসময়।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) এবার ১০টি ক্যাটাগরীতে ১০ জন সাংবাদিককে বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেছে। ডিআরইউ বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা মূল্যমানের চেক তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও জুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান ডিআরইউ’র সাবেক সভাপতি শাহজাহান সরদার।
ডিআরইউ’র সভাপতি ইলিয়াস হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, আজ হলি আর্টিজান হামলার ঘটনার রায় হয়েছে। সেখানে সাত জনের ফাঁসি হয়েছে। হলি আর্টিজানে জঙ্গিরা যেভাবে হত্যাকা- ঘটিয়েছে, এই ঘটনার পর সংবাদপত্রে অনুসন্ধানী রিপোর্ট বিচার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে সহায়তা করেছে। বাংলাদেশের গণমাধ্যম সবসময় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করেছে। এই রিপোর্টগুলো ভবিষ্যতে জঙ্গি তৈরি না হওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
জুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহজাহান সরদার বলেন, প্রতিযোগিতায় মানসম্পন্ন প্রতিবেদনের সংখ্যা বাড়ছে। যারা বিজয়ী হয়েছেন এবং যারা বিজয়ী হতে পারেননি তাদের মধ্যে প্রাপ্ত নম্বরের ব্যাবধান খুবই কম। এবার যারা বিজয়ী হতে পারেনি আগামী দিনে তারা ভালো করবে বলে আমার বিশ্বাস।
সভাপতির বক্তব্যে ইলিয়াস হোসেন বলেন, নানা অসঙ্গতি, অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়ে প্রকাশিত রিপোর্টগুলো দেখে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিলে দেশ উপকৃত হবে মুক্ত গণমাধ্যম চর্চায় গণতন্ত্র ও মুক্ত বুদ্ধি বিকশিত হয়। ডিআরইউ’র বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড অব্যাহত থাকার আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ডিআরইউর সাংগঠনিক সম্পাদক ও বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড উপকমিটির আহ্বায়ক আফজাল বারীর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কবির আহমেদ খান। এছাড়া পুরস্কার প্রাপ্তদের মধ্য থেকে অনুভূতি প্রকাশ করেন এনটিভির শফিক শাহীন ও বাংলা ট্রিবিউনের শাহেদ শফিক। এসময় জুরি বোর্ডের সম্মানিত সদস্য যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম ও সিনিয়র সাংবাদিক মনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
এবারের বিজয়ীরা হলেন- প্রিন্ট ও অনলাইন ক্যাটাগরির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে দৈনিক যুগান্তরের মিজানুর রহমান চৌধুরী, শিক্ষা ও স্বাস্থে ডেইলি স্টারের মোহাম্মদ আল-মাসুম মোল্লা, অনুসন্ধানে বাংলা ট্রিবিউনের শাহেদ শফিক, বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে যুগ্মভাবে দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের জসিম উদ্দিন হারুন ও দৈনিক কালের কন্ঠের জিয়াদুল ইসলাম, ক্রীড়ায় দৈনিক প্রথম আলোর তারেক মাহমুদ, সাহিত্য-সংস্কৃতি-ঐতিহ্যে দৈনিক সমকালের তপন দাস। টেলিভিশন ক্যাটাগরিতে সেবা খাতে এনটিভির শফিক শাহীন, অনুসন্ধানে একাত্তর টিভির আদনান খান (নয়ন আদিত্য) এবং বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে চ্যানেল ২৪ এর মোর্শেদ হাসিব হাসান। রেডিও ক্যাটাগরিতে কোনো রিপোর্ট জমা পরেনি।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, ডিআরইউর যুগ্ম সম্পাদক জামিউল আহসান সিপু, অর্থ সম্পাদক জিয়াউল হক সবুজ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শেখ মাহমুদ এ রিয়াত, তথ্য ও প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক আবদুল হাই তুহিন, ক্রীড়া সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শামীম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোঃ এমদাদুল হক খান, আপ্যায়ন সম্পাদক এইচ এম আকতার, কল্যাণ সম্পাদক কাওসার আজম, কার্যনির্বাহী সদস্য বি এম নূর আলম (বাদল নূর), মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন ও রাশেদুল হক।