বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার হোম কোয়ারেন্টিন কেমন কাটছে। দুই শর্তে ছয় মাসের জন্য পর এখন দলের নীতিনির্ধারকরা সম্পূর্ণ মনোযোগ তাকে সুস্থ করে তোলার প্রতি।
তিনি প্রয়োজনীয় সুচিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হবেন তা নিয়ে কাজ করছেন সিনিয়র নেতারা। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থার অংশ বর্তমানে চিকিৎসক ও নার্সদের তত্ত্বাবধানে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজার’ দোতলায় হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন বেগম জিয়া।
সেখানে নিকটাত্মীয়দের প্রবেশের ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। তার কক্ষের পাশের একটি কক্ষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার পাশাপাশি ভাইরাসনিরোধক সুরক্ষা পোশাক পরার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তার কক্ষে যেতে হলে সেই পোশাক-মাস্কসহ সব রকমের সুরক্ষা নিশ্চিত করে যেতে হচ্ছে। কঠোর নিয়ম মেনেই নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে অবস্থান করতে হচ্ছে।
জানা গেছে, খালেদা জিয়া প্রয়োজন মতো দলের নেতা ও প্রিয়জনদের সঙ্গে মোবাইলে কথা-বার্তা বলতে পারছেন। কোনো সমস্যা অনুভব করলে ডাক্তারদের জানাচ্ছেন। সম্পূর্ণ ঘরোয়া পরিবেশে তিনি কখনো শুয়ে, কখনো বসে, কখনো বইপত্র পড়ে সময় কাটাচ্ছেন। হোম কোয়ারেন্টাইনের নিয়মাবলি মেনেই চিকিৎসকরা তাকে পর্যবেক্ষণ করছেন।
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা পরিস্থিতি ভালো হলে বিদেশে নিয়ে তার চিকিৎসা করানোর চিন্তা করছেন চিকিৎসকরা।
দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক টিমের সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, হোম কোয়ারেন্টাইনে নেত্রীর চিকিৎসা চলছে। তিনি শারীরিকভাবে গুরুতর অসুস্থ হলেও ঘরোয়া পরিবেশে এখন স্বস্তিবোধ করছেন। তার মানসিক শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, ফিরোজায় এখন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের সদস্য ও নিকট আত্মীয়-স্বজন ছাড়া কারও প্রবেশাধিকার নেই। এই সময়ে সোশ্যাল ডিসট্যান্স অর্থাত একজন থেকে অপরজনকে যে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে চলার নিয়ম তা যথাযথভাবে মেনেই ম্যাডামের সেবা প্রদানকারীরা সেবা দিচ্ছেন।
জাহিদ জানান, ছয় সদস্যের বোর্ডের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রফেসর ডা. এফ এফ রহমান, প্রফেসর ডা. রজিবুল ইসলাম, প্রফেসর ডা. আব্দুল কুদ্দুস, প্রফেসর ডা. হাবিবুর রহমান, প্রফেসর সিরাজ উদ্দিন তাকে পর্যবেক্ষণ করছেন। ম্যাডামের হাতপায়ে ব্যথা রয়েছে। ব্যথা উপশমের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ওষুধে কিছুটা পরিবর্তন এনেছেন। কারাগারে থাকাকালীন তার ৯-১০ কেজি ওজন কমে গেছে।
এদিকে, বিএনপি চেয়ারপারসন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। তিনি এখন প্রয়োজনীয় মেডিকেল চিকিৎসা পাবেন বলেও আশা ব্যক্ত করেছে সংস্থাটি। গতকাল শুক্রবার ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মুখপাত্রের এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
গত ২৫ মার্চ ৬ মাসের জন্য জামিন পান খালেদা জিয়া।