করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সব সাংবাদিককে প্রণোদনা দেয়ার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘প্রতিটি সাংবাদিককে অন্তত ২০ হাজার করে টাকা দিন। তাহলে তারা শক্তি পাবেন, সত্য বলার জন্য বেঁচে থাকবেন এবং আপনি (শেখ হাসিনা) সত্য শোনার অভ্যাস করুন। তাহলে আপনি জয়যুক্ত হবেন। দেশ জয়যুক্ত হবে। আমরা আরও গভীরভাবে আপনাকে ভালোবাসব।’
রবিবার (১০ মে) সাংবাদিক গ্রেফতার, নিপীড়ন, গণচাকরিচ্যুতর প্রতিবাদে ও বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এশিয়ান জার্নালিস্ট সোসাইটির উদ্যোগে সমাবেশটি আয়োজিত হয়।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘রাজনীতিবিদরা আপনাকে প্রবৃত্ত করে রাখেনি। আপনাকে প্রবৃত্ত করে রেখেছে তিন শ্রেণির গোয়েন্দা বাহিনী। তারা হলো- আমাদের নিজস্ব গোয়েন্দা বাহিনী, ভারতের র এবং মোসায়েদ। তাদের চারপাশে আছেন আমলারা। আমলারা হলেন সেই সব প্রাণী, আপনি যা শুনতে চান তারা তাই শোনায়। আপনি ডিসিদের সঙ্গে যে ডিজিটাল কনফারেন্স করেন, তাতে সেই কর্মকর্তারা প্রথম দুই মিনিট আপনার প্রশংসা করে পরে তারা কী করেছে সেটা বলে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের এই পরিস্থিতির মধ্যে যারা আপনাকে সঠিক তথ্য দিতে চাযন, তারা হলেন সাংবাদিক। গোয়েন্দা তথ্য দেয়। কিন্তু মনগড়া, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে গোয়েন্দারা কী আচরণ করেছে সেগুলো থেকে আপনার শিক্ষা নেয়া উচিত। আমি বিশ্বাস করি, আপনি দেশের ভালো চান। আর সেজন্য সাংবাদিকদের কথা বলতে দেন। কথা শোনার অভ্যাস করুন।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকরা কার্টুন করে কাদের, যাদের ভালোবাসে তাদের। সুতরাং আপনারা এই ব্যঙ্গকে ভয় পান কেন? তবে আপনি কয়েকটি ভালো কাজের চেষ্টা করেছেন। তার মধ্যে একটি প্রণোদনা, তবে সত্যিকার অর্থে যারা বড়লোক, তারাই এই প্রণোদনা সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। কৃষকের ধান কিনে নেবেন বলছেন। তবে কিছুটা কিনে নেবেন। এই কিছুটা কেনাই দুর্নীতি প্রশ্রয় দয়া হয়। অনুগ্রহ করে প্রতিটি কৃষকের কাছ থেকেই আপনি ধান কিনে নেবেন এবং ২৬ টাকার জায়গায় দুই টাকা বেশি দিয়ে কিনবেন।’
সরকারের উদ্দেশে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশের দু’কোটি পরিবারের এক কোটি একেবারে নিরন্ন (হতদরিদ্র), আর এক কোটি অর্ধ অনাহারে থাকে, তাদের সবাইকে মাসিক রেশন দেন। সাপ্তাহিক নয়, কারণ সাপ্তাহিক দিলে তাদের বারবার রাস্তায় আসতে হবে তাই মাসিক দিতে হবে। মনে রাখবেন, বাঘ যখন বনে খাবার না পায়, তখন লোকালয়ে আসে। মানুষ ঘর থেকে বের হয়েছে, আপনার নিয়ম ভঙ্গ করেছে, একমাত্র পেটের ক্ষুধার জ্বালায়। আর এই দুই কোটি মানুষের খাবার দেয়ার সামর্থ্য তো আমাদের আছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ১৬ লাখ টন চাল মজুত আছে। তাহলে তাদের সাহায্য করতে প্রবলেম (সমস্যা) কী?’