দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারি নভেল করোনা ভাইরাসে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মৃত্যুবরণকারী সাংবাদিকদের পরিবারকে ও করোনায় আক্রান্ত সাংবাদিকদের জীবনের ঝুঁকি ভাতা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
বৃহস্পতিবার (৪ জুন) জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘দেশের যেকোনেও সংকটকালীন সময়ের মতো করোনার এই কঠিন সময়েও সাংবাদিকরা তাদের অসাধারণ ভূমিকা এবং দায়িত্ব পালন করছেন। করোনা প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে সরাসরি কোনও করণীয় না থাকার পরও জনগণকে এ সম্পর্কে বাস্তব পরিস্থিতি অবহিত করে অতি গুরুত্বপূর্ণ এ দায়িত্ব সাহসিকতার সাথে পালন কালে সাংবাদিকরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি তৈরি করেছেন। এর মধ্যেই ৬ জন সংবাদকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়াও আক্রান্ত হয়েছেন আরও ২৪৪ জন সংবাদকর্মী।’
তারা বলেন, ‘করোনার এই সময়ে মৃত্যুবরণ করেছেন দেশের টেলিভিশন মাধ্যমটির বিকাশের পেছনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব মোস্তফা কামাল সৈয়দ। দীর্ঘ ৬০ বছর তিনি রাষ্ট্রীয় এবং বেসরকারি টেলিভিশনে কাজ করে অনেক ক্ষেত্রেই টিভি অনুষ্ঠানের একটি মানদণ্ড নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। তার চলে যাওয়ার প্রভাব মিডিয়া দীর্ঘকাল অনুভব করবে।’
বিবৃতিতে মোস্তফা কামাল সৈয়দ, দৈনিক সময়ের আলোর সিটি এডিটর হুমায়ুন কবির খোকন, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সিনিয়র সাংবাদিক সুমন মাহমুদ, দৈনিক ভোরের কাগজের ষ্টাফ রিপোর্টার এবং ক্যাবের সাবেক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসলাম রহমান, দৈনিক সময়ের আলোর সিনিয়র সাব-এডিটর মাহমুদুল হাকিম অপু এবং দৈনিক বাংলাদেশের খবরের ফটো সাংবাদিক এম মিজানুর রহমান খান- তাদের সকলের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ‘সাংবাদিকরা যেহেতু করোনার এই সময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন- এ কারণে তাদের জন্য যথাযত সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। করোনার এই সময়ে বহু ক্ষেত্রে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে অনেক মিডিয়া হাউজ তার কর্মীদের বেতন দিচ্ছে না, এমনকি অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাই করছে। অবিলম্বে সব ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে, ছাঁটাইকৃতদের পুনর্বহাল করতে হবে এবং তাদের বেতনপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। শুধু তাই নয়, যেহেতু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা কাজ করছেন, তাদের জন্য ঝুঁকি বিবেচনায় পর্যাপ্ত ভাতারও ব্যবস্থা করতে হবে।’
ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনরত সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও মামলার ঘটনাও ঘটেছে; সত্য প্রকাশের কারণে সাংবাদিক গ্রেফতারও হয়েছেন। আমরা গ্রেফতারকৃত সব সাংবাদিকের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করছি এবং ভবিৎষতে তাদের ওপর যে কোনও রকম হয়রানি বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। আমাদের মনে রাখতে হবে, যে কোনেও সংকটের সময়ে মুক্তমত প্রকাশ বাধাগ্রস্ত করলে সংকট আরো ঘনীভূত হয় এবং মানুষের জীবনের বিপর্যয় ঘটায়।’
বিবৃতিদাতারা হলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নাগরিক ঐক্যেও আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া ও বিকল্পধারা বাংলাদেশ’র চেয়্যারম্যান অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারী।