দেশবাসীকে গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রত্যেকটা নেতা-কর্মী এবং দেশবাসীকে আহ্বান জানাচ্ছি- পহেলা আষাঢ় আসুন সবাই মিলে গাছ লাগাই। গাছ লাগিয়ে দেশের পরিবেশ রক্ষা করি। আবার আমরা নিজেরা লাভবান হই, কারণ গাছ বিক্রির টাকা আপনাদেরই সংসারে কাজে দেবে।এই ব-দ্বীপটাকে (বাংলাদেশ) বাঁচাতে হলে বৃক্ষরোপণের বিকল্প নেই ।
সোমবার (১৫ জুন) বিকেলে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে কৃষকলীগ আয়োজিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,আসুন মুজিববর্ষে আমরা সবাই মিলে বৃক্ষরোপণ করে আমাদের দেশকে রক্ষা করি। দেশের পরিবেশ রক্ষা করি, আর মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করি। বেশি করে ফলগাছ লাগানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ব্যাপকভাবে ফলের গাছ লাগোনো দরকার। কারণ পুষ্টির যোগান ফল থেকে আসে। উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে সবুজ বেষ্টনী গড়তে হবে। যেগুলো মাটি ধরে রাখে, যেমন আমাদের ঝাউ গাছ, খেজুর গাছ, তালগাছ এগুলো আমাদের বিভিন্ন ভাবে লাগানো দরকার।এই ব-দ্বীপটাকে (বাংলাদেশ) বাঁচাতে হলে বৃক্ষরোপণের বিকল্প নেই। শুধু গাছ লাগালেই হবে না, গাছ লাগানোর পর গাছের কিন্তু পরিচর্যা করতে হবে। গাছ লালনপালন করতে হয়।নিজের সন্তানকে যেমন লালনপালন করতে হয়, একটা গাছ লাগালে তাকেও কিন্তু যত্ন করতে হবে, লালনপালন করতে হবে। তাহলে তো সে ফল দেবে। আমি ফল খাবো কিন্তু যত্ন করবো না এটা তো হয় না। আমি মনে করি সবাই গাছের যত্ন করবে।
আওয়ামী লীগসহ এর সব সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে অন্তত তিনটি করে গাছ লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন দলটির সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে দেশবাসীকেও অন্তত তিনটি করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানান তিনি।
কৃষক লীগ সভাপতি সমীর চন্দ এ সময় বলেন, বাঙালি আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাহসী বাঙালির মত যুদ্ধ করতে পারে । এই কোভিড ১৯ মহামারীতে আরো অন্যান্য দেশ যখন হিমশিম খাচ্ছে আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী সমগ্র জাতি তথা কৃষক শ্রমিক মেহনতি জনতা, ডাক্তার, চিকিৎসক, কৃষিবিদ সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে করানোর বিপরীতে যুদ্ধে নেমেছে । তাই সারা বাংলাদেশের মানুষ আজকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে সক্ষম হয়েছে । করোনা পরবর্তী খাদ্য সংকট মোকাবেলায় ধান কেটে কৃষকের গোলায় তুলে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ।তাই বাংলাদেশের কৃষক লীগের সকল নেতাকর্মী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ,স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং সরকারি কর্মকর্তাগণ অকুতোভয় সৈনিকের মত আপনার নির্দেশনায় ধান কেটে কৃষকের গোলায় তুলে দিয়েছে । শেখ হাসিনা হাসলে সারা বাংলাদেশ হাসে। মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে আমি দোয়া প্রার্থনা করি, হাজার হাজার কৃষক লীগ নেতাকর্মীদের শ্রদ্ধার বিনিময়ে যেন আপনার (শেখ হাসিনার) আয়ুকে দীর্ঘায়ু করে সুস্বাস্থ্য দান করেন।
কৃষক লীগ সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম এমপি তার বক্তব্যে বলেন , মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি নির্দেশ দিয়েছিলেন দেশে যেন কোনও কৃষক ধান কাটা নিয়ে মাথায় হাত না দেয় তারই অনুসরণে আমরা কৃষক লীগ নেতাকর্মীগণ সারা বাংলাদেশে দশটি জোনে বিভক্ত হয়ে সারাদেশে কৃষক লীগের নেতাকর্মীদের দিয়ে ধান কাটিয়ে দিয়েছি এবং হাওর-বাওর অঞ্চলে যেয়ে আমরা সরেজমিনে মনিটরিং করেছি নিশ্চিত করেছি প্রত্যেকটি কৃষকের ধান কাটা হয়েছে কি না ।
উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী গণভবনে গাছের চারা রোপণ করেন।
অনুষ্ঠানে কৃষকলীগ, যারা বেশি গাছ লাগাবে তাদের পুরস্কৃত করার কথা ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় শেখ হাসিনা পুরস্কার দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কৃষকলীগের ফান্ডে অর্থ সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, বর্তমান কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ ।