করোনাভাইরাস যেমন মানুষের নি:শ্বাস বন্ধ করে দেয় ঠিক তেমনিভাবে সরকারও জনগণের শ্বাস চেপে ধরেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয় ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার চলছে হুকুমবাদের মনোভাব ও বাধ্যকরণের নীতির বাস্তবায়নের মাধ্যমে। তাদের আর একটি প্রধান নীতি হচ্ছে জনগণকে বশ মানাতে বলপ্রয়োগ করা। সরকারের অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে গ্রামে গ্রামে নীরবে ছড়াচ্ছে করোনাভাইরাস। ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশই এখন কোভিড-১৯ ভাইরাসের দখলে। ঢাকার পরিস্থিতি ভয়াবহ ও বিপজ্জনক। করোনার অভিঘাতে দেশব্যাপী প্রায়-দুর্ভিক্ষাবস্থা বিরাজ করছে। অর্থনীতির চাকা স্তিমিত, আমদানীর পাশাপাশি রফতানী আরও আশঙ্কাজনক হারে কমছে, ধসে গেছে রেমিটেন্স। করোনার কারণে চাহিদা ও ভোগ হ্রাস পাওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে জনগোষ্ঠীর একটি বিশাল অংশ। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন আয়ের মানুষদের চোখে সর্ষে ফুল দেখার দশা। এর ওপর ফ্যাসিবাদের অবয়ব চূড়ান্ত রুপ ধারণ করেছে।
তিনি বলেন, সরকার তাদের সৃষ্ট শূন্যভান্ডার পূরণ করতে মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্ন আয়ের মানুষের গলায় ছুরি বসিয়ে টাকা আদায় করছে। করোনা মহামারীর এই প্রলয়ংকারী দুর্যোগের সময় সুষ্ঠু ভোটে নির্বাচিত দায়িত্বশীল সরকার থাকলে বিদ্যুৎ বিল মওকুফ, বাড়ি ভাড়ার বিষয়ে সহায়তা করা, বিনামূল্যে করোনা চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সহায়তা করতো।
বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, করোনা ভাইরাস যেমন মানুষের নি:শ্বাস বন্ধ করে দেয় ঠিক তেমনিভাবে সরকারও জনগণের শ্বাস চেপে ধরেছে। সরকার এতোটাই নির্বিবেক ও বেপরোয়া যে, হরিলুট হওয়া সরকারী অর্থের ঘাটতি পূরণে গরীব মানুষের শরীর থেকে রক্ত টেনে নিচ্ছে।
এই করোনাকালে আমরা বেশ কয়েকজন মানবিক বাড়ীওয়ালা দেখেছি যারা ভাড়াটিয়াদের বাড়ীভাড়া মওকুফ করে দিয়েছেন। আবার অনেক বাড়ীওয়ালা ভাড়াটিয়াদের সাথে করছে নির্দয় আচরণ। ভাড়াটিয়ারা খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছে, কখন তাদেরকে বাসা থেকে বের করে দেয়। সরকার বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে বাড়ীওয়ালারাও ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে নানাভাবে মাশুল আদায় করছে অন্যায়ভাবে। যারা ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহিতা তাদের সুদ মওকুফের ঘোষণা দেয়া হলেও নির্দয়ভাবে সুদ আদায় করা হচ্ছে। এই সরকার দেউলিয়া হওয়া অর্থনীতি সচল রাখার জন্য স্বল্প আয়ের মানুষদের মাটির সাথে মিশিয়ে দিচ্ছে। বর্তমান দুর্নীতি-বান্ধব সরকার দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতি, করোনার আঘাতে দেশের বেহাল দশা ও প্রায়-দুর্ভিক্ষাবস্থা ঠেকাতে ‘কোড অব সাইলেন্স’ প্রয়োগ করছে। অসহায় মানুষকে নীরবে সইতে হচ্ছে ক্ষুধা ও জুলুমের যন্ত্রণা। অসম্ভব হয়ে পড়েছে মানুষের জীবন-যাপন।