সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সকল কর্মকাণ্ডে অনুপ্রেরণার উৎস। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়ন তথা বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায় তিনিই কাণ্ডারী। তাঁর সঠিক, যোগ্য ও সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন বলেই বেঁচে আছে বাংলাদেশ। তিনি আছেন বলেই বাংলাদেশ আজ সঠিক পথে রয়েছে এবং বঙ্গবন্ধুর চেতনা ও আদর্শ বাস্তবায়িত হতে পারছে।
প্রতিমন্ত্রী আজ সকালে রাজধানীর বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এর নলিনীকান্ত ভট্টশালী গ্যালারীতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৫তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোকদিবস ২০২০ উপলক্ষে ‘হাসুমণি’র পাঠশালা’ আয়োজিত “আগস্ট এক অন্ধকার অধ্যায়” শিরোনামে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি, বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার বক্তৃতা অবলম্বনে গোলটেবিল আলোচনা এবং জাকির হোসেন পুলক এর চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে উদ্বোধকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
হাসুমণির পাঠশালার সভাপতি মারুফা আক্তার পপি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি এবং প্রধান আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি। সম্মানিত অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান এমপি।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের সময় দেশে না থাকায় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বেঁচে যান। সে ঘটনাকে অলৌকিক উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ৩০ জুলাই দেশরত্ন শেখ হাসিনার জার্মানিতে বসবাসরত স্বামী বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়া’র নিকট যাওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু ঐ সময় তাঁর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় অসুস্থ হয়ে পড়া এবং অন্যদিকে ১৫ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর প্রধান অতিথি হিসাবে যোগদানের কথা থাকার কারণে জার্মানিতে যাওয়ায় বিষয়ে তিনি দ্বিধান্বিত ছিলেন। সেজন্য তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরীর দোয়া ও পরামর্শ নেয়ার জন্য তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে ১৫ আগস্টের পর জার্মানিতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর পরামর্শ চাইলে তিনি স্বামী এম এ ওয়াজেদ মিয়া’র পরামর্শ মোতাবেক সিদ্ধান্ত নিতে বলেন। স্বামী ওয়াজেদ মিয়া তাঁকে জার্মানিতে দ্রুত চলে যাওয়ার অনুরোধ করলে স্বামীর আহবানে অবশেষে তিনি জার্মানিতে ফিরে গেলেন। তিনি ১৯৭৫ সালের ৩০ জুলাই ছোট বোন শেখ রেহানা সহ রওয়ানা হয়ে ৩১ জুলাই জার্মানিতে পৌঁছান। মহান আল্লাহপাকের অশেষ রহমতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে যাত্রায় বেঁচে গিয়েছিলেন।
গোলটেবিল আলোচনায় আরো অংশগ্রহণ করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম, গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবু বকর সিদ্দিক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না, বাংলাদেশ যুব মৈত্রী’র সভাপতি সাব্বাহ আলী খান কলিংস, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাহাদুর বেপারী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, চিত্রশিল্পী কংকা জামিল, সূচিশিল্পী ইলোরা পারভীন প্রমুখ।
শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এর মহাপরিচালক খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান। আলোচনা সূত্র উপস্থাপন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন স্টাডিজ এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক জুনায়েদ হালিম।
উল্লেখ্য, জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শুরু হয় এবং বঙ্গবন্ধু সহ ১৫ আগস্টের শহিদদের স্মরণে এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়। শ্রদ্ধা সংগীত গেয়ে শোনান শিল্পী সামশুল হুদা।