নিজস্ব প্রতিবেদক: নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম বর্ষে পদার্পণ ও দেশপ্রেম দিবসে আন্তর্জাতিক সেমিনারে বক্তারা বলেন, সুভাষচন্দ্র বসু এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক রাজনীতি এক সূত্রে গাঁথা। বক্তারা বলেন, সুভাষচন্দ্র বসু ভারতবর্ষের জনগণের দাবি আদায়ের লক্ষে ইংরেজদের বিরুদ্ধে এক অগ্নি স্ফুলিঙ্গ হয়েই আন্দোলন চালিয়ে গেছেন। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে তিনি হলেন এক উজ্জ্বল ও মহান চরিত্র যিনি নিজের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তেমনি বঙ্গবন্ধু তার জীবনের মায়া ত্যাগ করে দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে প্রাণপণ চেষ্টায় ছিলেন বলেই আজ আমরা স্বাধীন।
রবিবার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম বর্ষে পদার্পণ ও দেশপ্রেম দিবসে সিরডাপ মিলনায়তনে এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। পুরো প্রোগ্রামের আয়োজনের সহযোগিতায় ছিলো বহুমাত্রিক ডট কম।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ বলেন, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ভারতের স্বাধীনতার এক মহানায়ক হিসেবে ভারতীয়দের হৃদয়ে যেমন আছে তেমনি বঙ্গালী হিসেবে আমাদের হৃদয়েও তার অবস্থান রয়েছে। আমরা নেতাজিকে আজীবন শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করবো।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতে আমাদের সহায়তা করে পাশে থেকেছে, বর্তমানেও তারা আমাদের পাশে আছে। ভারত আমাদের পরম বন্ধু বলেই তাদের দেশে শতভাগ জনগণ করোনা ভ্যাকসিন পাওয়ার আগেই আমাদের বন্ধুত্বের প্রমাণ স্বরূপ ২০ লাখ করোনা ভ্যাকসিন উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছে। আমাদের তিন দিকের সীমানায় ভারত রয়েছে। দেশের উন্নয়নে বন্ধু দেশ ভারতের সহায়তা আমাদের প্রয়োজন। করোনার এ সংকট সময়ে ভারতের উপহার ভ্যাকসিন দেওয়ায় নরেন্দ্র মোদীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন তথ্যমন্ত্রী।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, কারও কারও এজেন্ডা ভারত বিরোধিতা করা। পার্শ্ববর্তী কোনো দেশের সাথে বৈরিতা সৃষ্টি করে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এই রাজনৈতিক দলগুলো আবার ভিতরে ভিতরে ভারতের সাথে বন্ধুত্ব গড়তে চায়। তারা শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয় সহ্য করতে পারে না বলে ভুল নিউজের উপর ভিত্তি করে দেশে গুজব ছড়িয়েছে ভারত আমাদের করোনা টিকা দিবে না। তাই তাদের আমি বলবো আপনারা যতই বিদেশে গিয়ে বৈঠক করে আওয়ামী লীগ সরকারের বদনাম করেন না কেন, তাতে কোন লাভ হবে না। দেশের জনগণ আমাদের উপর শতভাগ আস্থা রাখে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, বিশ্ব নেতাদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু এক ত্যাগী আদর্শবান নেতা। তাইতো নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক রাজনীতি এক সুত্রে গাঁথা। ভারতের হাইকমিশনার দোরাইস্বামী তার বক্তৃতায় বাংলাদেশে নেতাজির জন্মবার্ষিকী উদযাপনকে অত্যন্ত অন্তর ছুঁয়ে যাওয়া ঘটনা বলে অভিহিত করেন এবং দু’দেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ঘনিষ্ঠতর হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
আমন্ত্রিতদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী বলেন, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ভারত ও বাংলার জনসাধারণের মনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। ভারত স্বাধীনের জন্য লড়াই করেছিলো যেমন নেতাজি তেমনি বাংলাদেশের মানুষের জন্য ভারাক্রান্ত হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। তাইতো তিনি তার পরিবারের কথা চিন্তা না করে দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে পাক হানাদার বাহীনির বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। নেতাজির আহ্বানে যেমন ভারত ইংরেজদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে তেমনি বঙ্গবন্ধুর আহবানে দেশের ৩০ লক্ষ তাজা প্রাণের বিনিময়ে একটি সোনর বাংলাদেশ উপহার পেয়েছি।
আবেদ খান বলেন, বঙ্গবন্ধু এবং নেতাজির জন্মবার্ষিকী অভূতপূর্ব এক মিল বন্ধনে আবব্ধ। ১৯৪১ সালে তিনি বলেছিলেন তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি দিব স্বাধীনতা। নেতাজির সেই উক্তি আমাদের মাঝে অগ্নি মশাল হিসেবেই আছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী সরোয়ার হোসেন বাবু প্রমুখ।