চট্টগ্রাম টেস্টে বড় লিড নিয়েই চতুর্থ দিন শুরু করে বাংলাদেশ। তিন উইকেটে ৪৭ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছিল বাংলাদেশ। উইকেটে ছিলেন অধিনায়ক মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম। আজ শনিবার সকালে শুরুটা ভালোই করেছিলেন দুজন। তবে দলীয় ৭৪ রানের মাথায় কর্নওয়ালের বলে এলবিডব্লু হয়ে ফিরেছেন মুশফিক। ৪৭ বলে ১৮ রান করেন তিনি।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চার উইকেটে ১৪২ রান তুলেছে বাংলাদেশ। এরই ফিফটি তুলে নিয়েছেন মুমিনুল। তিনি করেন ৭৭ রান। লিটন দাসের সংগ্রহ ৩৭ । বাংলাদেশের লিড ৩১৩ রান।
তবে লিড যতটা সম্ভব বাড়িয়ে নিতে চাইছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। অবশ্য গতকাল শুক্রবার দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি বাংলাদেশের টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানেরা। একে একে ব্যর্থ হয়েছেন তামিম ইকবাল, নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাদমান ইসলাম। তবুও প্রথম ইনিংসে বড় লিড পাওয়ায় স্বস্তি নিয়ে টেস্টের তৃতীয় দিন শেষ করে মুমিনুল হকের দল।
দ্বিতীয় ইনিংসে গতকাল ব্যাট করতে নেমে তিন উইকেটে ৪৭ রান নিয়ে দিন শেষ করে বাংলাদেশ। দিন শেষে উইকেটে ছিলেন মুমিনুল হক (৩১) ও মুশফিকুর রহিম (১০)। ফলে ২১৮ রানে এগিয়ে আছে স্বাগতিকেরা।
চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ হয়েছেন তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেন শান্ত। বড় লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে জোড়া উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর আশা জাগিয়ে ফেরেন সাদমান ইসলাম। দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে দিনের শেষভাগ ভালোভাবে পার করেন মুমিনুল ও মুশফিক।
শুরুর দিকে দুটি উইকেটই নিয়েছেন রাকিম কর্নওয়াল। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের চার নম্বর বলে প্রথমে এলবির ফাঁদে ফেলেন তামিমকে। এরপর সাজঘরে ফেরান শান্তকে। ১৫.১ ওভারে সাদমানকে আউট করেন গ্যাব্রিয়েল। ৪৩ বলে পাঁচ রান করেন তরুণ এই ওপেনার।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৯৬.১ ওভারে ১০ উইকেটে ২৫৯ রান তুলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফলে ১৭১ রানের বড় লিড পায় বাংলাদেশ।
গতকাল দুই উইকেটে ৭৫ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দিনের প্রথম সেশনেই তিন উইকেট হারায় তারা। প্রথম সেশনে তিন উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ান জশুয়া ডি সিলভা ও জার্মেইন ব্ল্যাকউড। দুজন মিলে ২৫৫ বল খেলে ৯৯ রানের জুটি গড়েন। অবশেষে থিতু হওয়া এই জুটিকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি ফেরান দুই স্পিনার—মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাঈম হাসান। আজ তৃতীয় দিনের আটটি উইকেটই পেয়েছেন স্পিনাররা। এর মধ্যে মিরাজ চারটি পেয়েছেন। সমান দুটি করে পেয়েছেন তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান। আগের দিন দুটি উইকেট পেয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেন ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। এ ছাড়া ৬৮ রান আসে ব্ল্যাকউডের ব্যাট থেকে। ৪২ রান করেন ডি সিলভা। আর ৪০ রান আসে কাইল মেয়ার্সের ব্যাট থেকে।
এর আগে গতকাল চা বিরতিতে যাওয়া আগে সিলভাকে ৪২ রানে আউট করেন নাঈম। এরপর ৬৮ রান করা ব্ল্যাকউডকে বিদায় করেন মিরাজ। তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে দাপট দেখালেন স্পিনাররা। দিনের শুরুতে বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন তাইজুল ইসলাম। ফিরিয়ে দেন এনক্রুমা বোনারকে (১৭)। তাইজুলের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের চতুর্থ উইকেট তুলে নেন আরেক স্পিনার নাঈম হাসান। এরপর কাইল মায়ার্সকে সাজঘরে পাঠান মিরাজ।
ম্যাচ শুরুর দিন গত বৃহস্পতিবার মেহেদী হাসান মিরাজের ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪৩০ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ। ম্যাচের তৃতীয় দিনের খেলা শুরু হয় গতকাল। সফরকারী ক্যারিবীয়রা ৩৫৫ রানে পিছিয়ে থেকে খেলা শুরু করে।
বাংলাদেশের বড় সংগ্রহের বিপরীতে নিজেদের ইনিংস শুরু করে ম্যাচের প্রথম দিন শেষে ২৯ ওভারে দুই উইকেটে ৭৫ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্যারিবীয়দের ওই দুটি উইকেট নেন বাংলাদেশের পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। এলবির ফাঁদে ফেলে ফিরিয়ে দেন ক্যারিবীয়দের দুই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান জন ক্যাম্পবেল ও শেন মোজলিকে।
ইনিংসের পঞ্চম ওভারে মুস্তাফিজের করা অফ স্টাম্পের বাইরের বল ভেতরে ঢুকেছিল। ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন ক্যাম্পবেল। কিন্তু টাইমিং ঠিক হয়নি। আঘাত হানে তাঁর প্যাডে। সঙ্গে সঙ্গে আঙুল তোলেন আম্পায়ার। পরে রিভিউ নিয়েছিলেন ক্যাম্পবেল। তাতে লাভ হয়নি। বলটি মিডল আর লেগ স্টাম্প বরাবরই ছিল। একই ভাবে এলবির ফাঁদে ফেলে মোজলিকেও সাজঘরের পথ দেখান কাটার মাস্টার। এরপর দিনের বাকি অংশ ব্যাথওয়েট ও বনারের ব্যাটে পার করে সফরকারীরা।