বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি), ঢাকা কেন্দ্রের নির্বাহী কমিটি। চ্যানেলটিকে ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবিরের’ মুখপত্র বলে উল্লেখ করা হয়।
শুক্রবার সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আইইবির ঢাকা কেন্দ্রের পক্ষে এ দাবি জানান ঢাকা কেন্দ্রের সম্পাদক প্রকৌশলী কাজী খায়রুল বাশার।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘আল-জাজিরা বহু আগে থেকেই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করে চলেছে। জঙ্গিবাদকে উসকে দেয়ার কাজও তারা সুচারুভাবেই চালিয়ে যাচ্ছে। এবার তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার ধারা ব্যাহত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, আল-জাজিরা কর্তৃক বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্র অতীতের মতো ভবিষ্যতেও রুখে দেবেন দেশের সচেতন নাগরিকরা।’
তারা বলেন, আল-জাজিরা শুধু বাংলাদেশের ক্ষেত্রেই পক্ষপাতমূলক সংবাদ পরিবেশনা করছে না, বরং এ ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুবিদিত। পশ্চিমা বিশ্বে আল-জাজিরাকে দেখা হয় সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের পরোক্ষ প্রেরণাদাতা হিসেবে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ পরিবেশনের কারণে মিসর ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সরকার এই সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। এই যখন পরিস্থিতি, তখন বাংলাদেশেও জনমত জোরদার হচ্ছে আল-জাজিরার বিরুদ্ধে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আল-জাজিরা কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদন একগুচ্ছ বিভ্রান্তিকর শ্লেষ আর বক্র ইংগিত ছাড়া আর কিছু নয়, যা আসলে চরমপন্থী গোষ্ঠী জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কুখ্যাত কিছু ব্যক্তির দ্বারা পরিচালিত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ‘অপপ্রচার’, যারা ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ রাষ্ট্রের প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক নীতির বিরোধিতা করে আসছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, আল-জাজিরার প্রতিবেদনে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তার মূলসূত্র একজন সন্দেহভাজন আন্তর্জাতিক অপরাধী, যাকে আল-জাজিরাই ‘সাইকোপ্যাথ’ আখ্যায়িত করেছে। প্রধানমন্ত্রী বা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ওই ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতার সামান্যতম প্রমাণও সেখানে নেই। আর মানসিক ভারসাম্যহীন কারো কথার ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাওয়া একটি আন্তর্জাতিক নিউজ চ্যানেলের জন্য বড় ধরনের দায়িত্বহীনতার পরিচায়ক।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা-বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও মানহানিকর’ আল-জাজিরার প্রামাণ্যচিত্র প্রচারের প্রতিবাদে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি), ঢাকা কেন্দ্রের নির্বাহী কমিটি ও কাউন্সিলের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানানো হয়।
তারা ‘বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের’ অপরাধে আল-জাজিরার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া এবং জামায়াতে ইসলামীর ‘পেইড এজেন্ট’ ডেভিড বার্গম্যানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানান। সূত্র : বাসস।