হাজার শ্রমিকের রক্তে ভেজা রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির আজ আট বছর পূর্ণ হলো। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঢাকার অদূরে সাভারে ধসে পড়েছিল নয় তলা ভবন রানা প্লাজা। এটি বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা। সেদিন দেহ-মনে ক্ষত নিয়ে যারা বেঁচে ফিরেছেন পরিবারে অর্ধ-অনাহারে দিন চলছে তাদের৷
এ ঘটনায় প্রাণ হারান ১ হাজার ১৩৬ জন শ্রমিক। গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন ১ হাজার ১৬৯ জন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১০৩ জনের লাশ আজও শনাক্ত হয়নি। তাদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে রাজধানীর জুরাইনে বেওয়ারিশ হিসেবে কবর দেওয়া হয়।
জাতীয় ফরেনসিক ল্যাবের কারিগরি উপদেষ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক শরীফ আখতারুজ্জামান বলেন, দুর্ভাগ্য হলেও সত্য যে রানা প্লাজা ধসে নিহত শতাধিক মানুষের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের ডিএনএ নমুনা সংরক্ষিত আছে। আত্মীয়স্বজনের দেওয়া ডিএনএ নমুনার সঙ্গে তাদের ডিএনএ নমুনার মিল পাওয়া যায়নি।
রানা প্লাজা ধসে মারা যাওয়া ৮০০ জনের মরদেহ হস্তান্তরের সময় তাদের কোনো ডিএনএ নমুনা সংরক্ষণ করা হয়নি বলে জানান তিনি। এই অধ্যাপকের মতে, প্রতিটি মরদেহের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহে রাখা উচিত ছিল। তাতে অশনাক্ত মৃতদেহের সংখ্যা কম থাকত।
এ ঘটনায় চারটি মামলা করা হয়। দীর্ঘ আট বছরে চারটি মামলার মধ্যে সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগে রানা ও তার মায়ের বিরুদ্ধে দুদকের একটি মামলা নিষ্পত্তি হলেও বাকি তিনটি মামলা নিষ্পত্তির মুখ দেখছে না। এরমধ্যে হত্যা ও ইমারত আইনের রাজউকের মামলাটি এখনো সাক্ষ্যগ্রহণই শুরু হয়নি।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ‘দুজন আসামির পক্ষে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। সাক্ষীরা সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য খোঁজ খবর নিলেও সাক্ষ্য নিতে পারছেন না রাষ্ট্রপক্ষ। স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হলে সাক্ষ্যগ্রহণ সম্ভব হবে।