করোনার দ্বিতীয় ঢেউ দেশে সংক্রমণের হার আশঙ্কাজনক বেড়ে যাওয়ায় মাহে রমজানের মাঝে লকডাউন ঘোষণা দেয় সরকার। চলমান এ লকডাউনের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার দরিদ্র, অসহায় ও দুস্থ মানুষের সমস্যার বিষয় চিন্তা করে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তারা যেন ইউনিয়ন পর্যন্ত সকল মানুষের পাশে দাাঁড়ায়।
দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পরামর্শে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দফতর সেল থেকে প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা কাছে পাঠানো হয়েছে। জেলা, মহানগর ও উপজেলা নেতাদের কাছে টেলিফোন ও মোবাইল ফোনে ক্ষুদেবার্তার মাধ্যমে পাঠানো নির্দেশনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া শুক্রবার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে দলীয় নেতাদের কষ্টে থাকা সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সরকারের পাশাপাশি দলীয়ভাবেও ত্রাণ সহায়তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সেই নির্দেশনা আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে সারা দেশের তৃণমূল নেতাদের কাছে টেলিফোন ও ক্ষুদেবার্তার মাধ্যমে পৌঁছে দিয়েছি।
আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানও সারা দেশে জেলা-মহানগর-উপজেলা নেতাদের কাছে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পৌঁছে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
এদিকে প্রথম দফার মতো দ্বিতীয় দফাতেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা লকডাউনে সঙ্কটে পড়া অসহায় মানুষের চিকিৎসাসহ খাদ্যসামগ্রী নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন। দেশে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষায় মাঠে নানা পদক্ষেপ নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। ইতোমধ্যে কৃষকদের ধান কেটে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দিতে কৃষক লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা কাজ করে যাচ্ছেন।
যুবলীগও কৃষকদের ধান কাটাসহ ঢাকার করোনা রোগীদের বিভিন্ন হাসপাতালে পৌঁছে দিতে এবং করোনাক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারীদের বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে বাসায় পৌঁছে দিচ্ছে। আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগও করোনা রোগীদের সহায়তায় ফ্রি অক্সিজেন সিলিন্ডার সেবা প্রদানসহ হেল্প লাইনের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাধ্যমে চিকিৎসা পরামর্শ কার্যক্রম শুরু করেছে। ছাত্রলীগ কৃষকদের ধান কেটে দেওয়াসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী ও খাদ্য সহায়তা প্রদান কার্যক্রম শুরু করেছে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপ-কমিটি ঢাকাসহ সারা দেশে প্রতিদিনই বিপুল সংখ্যক ত্রাণ সামগ্রীর পাশাপাশি স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সেবাদানকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে।
শুক্রবার থেকে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগও ত্রাণ তৎপরতা জোরদার করেছে। এছাড়া ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনগুলোও সারাদেশে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সাধ্যমত সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে।
এদিকে দলীয়ভাবে ত্রাণ সহায়তা জোরদার করার নির্দেশনার আগেই ইতোমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে করোনাভাইরাসের চলমান লকডাউনে কষ্টে থাকা দরিদ্র, দুঃস্থ, ভাসমান এবং অসচ্ছল মানুষকে সহায়তার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে সাড়ে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও করোনা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ৩৬ লাখ পরিবারকে ঈদের আগেই আর্থিক সহায়তারও ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।