করোনাভাইরাসের মহামারীতে দেশে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া এবং কঠোর লকডাউন পরিস্থিতি-এই দু’টি বিষয়কে সামনে রেখে আসছে শোকাবহ আগস্টে দলের চলমান মানবিক কর্মসূচি আরো জোরদার করবে আওয়ামী লীগ।
বিদ্যমান সংকটময় পরিস্থিতিতে দলের নেতাকর্মীদের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত হবে আরও নানা কর্মকাণ্ড।
দলের দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, আগস্টে শোকের মাসে আওয়ামী লীগের বিস্তৃত কর্মসূচি থাকে। এবারো থাকবে, তবে তা সীমিত আকারে। তবে নিয়মিতভাবে শোকাবহ আগস্টের যে কর্মসূচি থাকে, তা কাটছাঁট করবে দলটি। বরং এই আগস্টে শোককে শক্তি পরিণত করে দেশের জনগণের জন্য আরো ব্যাপকভাবে মানবিক কর্মকাণ্ড করবে আওয়ামী লীগ।
তারা বলেন, করোনাভাইরাসের এই সংকটে একমাত্র রাজনৈতিক কর্মসূচি হচ্ছে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। আর এটাই এখন আওয়ামী লীগের একমাত্র রাজনৈতিক কর্মসূচি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই একমাত্র রাজনৈতিক দল, যারা রাজধানী থেকে গ্রাম পর্যন্ত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। আগস্টে আওয়ামী লীগ চাচ্ছে, লকডাউনে সংকটে পড়া মানুষের পাশে দাড়াতে। যাতে সংকটপীড়িত কোনো মানুষ ক্ষুধায় কষ্ট না পায়। একই সঙ্গে তাদের স্বাস্থ্য-সুরক্ষার বিষয়টিও যাতে নিশ্চিত হয়।
সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আগস্টের এই মানবিক কর্মসূচি নিয়ে নিজদের মধ্যে আলোচনা করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এ সময় দলের সভাপতিমন্ডলীল সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম ছিলেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, “আওয়ামী লীগ যথাযোগ্য মর্যাদায় এবং ভাবগাম্ভীর্যর মধ্য দিয়ে শোকাবহ আগস্ট পালন করবে অতীতের মতো করে। তবে এবার কোভিড পরিস্থিতির কারনে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব কর্মসূচি পালিত হবে।
“দেশব্যাপী করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আগস্টে দেশের মানুষের জন্য আরো বিস্তারিত কর্মসূচি নেয়ার চিন্তা করছে দল।”
তিনি বলেন, “করোনার শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এ কারনে কেন্দ্র থেকে তৃনমূল পর্যন্ত আমাদের অনেক নেতাকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন, মৃত্যুবরণ করেছেন। তবে আমরা জীবনের ভয়কে জয় করে মানুষের কল্যাণে আত্মনিবেদন করেছি। আগস্টে সেই কর্মসূচির সঙ্গে আরো বিস্তৃত কর্মসূচির পরিকল্পনা করছি আমরা।”
আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, “শোকাবহ আগস্টে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন, সীমিত আকারে আলোচনা সভা, বঙ্গবন্ধুর জীবনীর ওপর আলোকপাত, ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা এসব কর্মসূচি স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে আয়োজন থাকবে। তবে যাতে ব্যাপক গণ-জমায়েত না হয় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি আছে আমাদের।
“এবারের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। সংক্রমণের রেকর্ড পার করছে দেশ। এজন্য এবারের শোকাবহ আগস্টে আমরা শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে বেশ কিছু কর্মকাণ্ড হাতে নেবো। করোনায় মানুষের জন্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা কাজ করছেন। এর সঙ্গে আরো বিস্তৃত আকারে মানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবো আমরা, দেশের জন্য নিজদের উজাড় করে দেবে প্রতিটি নেতাকর্মী।”
ঈদের আগে দিনমজুর, পরিবহন শ্রমিক, মেহনতি মানুষ যারা লকডাউনে সরকারের নির্দেশনা মেনে কষ্ট হলেও সহযোগিতা করছেন তাদের জন্য আলাদা কর্মসূচি থাকবে জানিয়ে নাছিম বলেন, “কোনো মানুষ যাতে ক্ষুধায় কষ্ট না করেন সেই দিকে আমাদের দৃষ্টি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকতে কেউ কষ্ট করবে না এটি আমরা নিশ্চিত করবো।
“এর পাশাপাশি মানুষকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ তো থাকছেই। আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে নীরবে এই কাজগুলো করবে, যাতে জমায়েত না হয়।”