
‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ অভিযোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার সব দায় সরকারকে নিতে হবে বলে মনে করছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘রূঢ় শোনালেও এটা অস্বীকার করার সুযোগ নাই, গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক এ নিষেধাজ্ঞা বর্তমান চলমান গণ ও মানবতাবিরোধী সরকারের জন্য সমগ্র বিশ্ববাসীর পক্ষ থেকে একটি শক্তিশালী বার্তা। সেটা হলো কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এ ধরনের বিচারহীন সংস্কৃতি চলতে পারে না।’
বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুলশান বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদক এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে যৌথ সভা করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কেবলমাত্র একটা অগণতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদী সরকারের শাসনকালেই এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়। আর বাংলাদেশে বর্তমানে সেরকমই একটি কর্তৃত্ববাদ ও মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং দুর্নীতি আশ্রয়ী সরকারব্যবস্থা চালু রয়েছে। বিএনপি মনে করে র্যাবের ওপরে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সব দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার লক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বেআইনিভাবে ব্যবহার করার সব দায়িত্ব তাদেরই।’
র্যাবের ওপর একটি পরাশক্তি রাষ্ট্র কর্তৃক বড় ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী হিসেবে চিহ্নিত হওয়া জাতিসংঘের শান্তি মিশনে মোতায়েনও প্রভাবিত করতে পারে— উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এর ফলে আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপরে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।’
গত এক দশকে র্যাব, পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে সরকার বিএনপিসহ ভিন্নমতের মানুষদের গুমের সংস্কৃতি চালু রেখেছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সেটাকেই তারা অস্বীকার করে চলেছে। মূলত সরকারের বিচারবহির্ভূত হত্যাকে অস্বীকার করার ফলাফল হচ্ছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ থেকে এ নিষেধাজ্ঞা।’
র্যাবের ওপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা আগামী সংসদ নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন যদি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হয়, নিরপেক্ষভাবে হয়, নিঃসন্দেহে সেটা পড়বে।’
নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে বিএনপি যাবে কি না জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা এখন আমরা বলতে পারি না। কারণ এটা সম্পর্কে আমরা এখনও জানিই না।’
বিএনপি আমন্ত্রণ পেলে যাবে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা এখনও কিছুই জানি না।’
তিনি বলেন, ‘স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২২ তারিখ থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার জন্য প্রেরণের দাবিতে জেলা পর্যায়ে সমাবেশের তারিখ নির্ধারণ করেছি। এটা ২২ তারিখে শুরু হবে। ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সমাবেশ চলবে। সমাবেশে যাওয়ার জন্য কয়েকটি টিম করা হয়েছে। সেগুলো যাবে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে আপনাদের।’
প্রথম দিন ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল, খুলনা বিভাগের যশোর, রংপুর বিভাগের দিনাজপুর, রাজশাহী বিভাগের বগুড়া, সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ ও চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মবাড়ীয়ায় সমাবেশ হবে। এসব সমাবেশ স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় নেতারা সমন্বয় করবেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর টাঙ্গাইলের জনসভায় বক্তব্য রাখবেন।
২২, ২৪ ও ২৬ ডিসেম্বর বিভিন্ন বিভাগের জেলা সদরে প্রতিদিন ৬টি এবং ২৮ ও ৩০ ডিসেম্বর প্রতিদিন ৭টি করে সমাবেশ হবে।








