চাল-তেল-আটা-গুড়ো দুধ, শাক-সবজি মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আলু-বেগুনসহ সবজির গায়ে হাত দিলে বিদ্যুতের মতো শক করে। ওএমএসের লম্বা লাইনে মধ্যবৃত্ত শ্রেণি।
এমন একটা দুর্বিসহ অবস্থার মধ্যে আমরা দিন অতিবাহিত করছি।
রোববার (১৩ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় দ্রব্যমূল্য বাড়ার প্রতিবাদে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করার সময় সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, রাষ্ট্র ক্ষমতায় যারা বসে আছেন তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই বলেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশছোঁয়া। গত ১০ বছরে এ সরকার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে ৯০ শতাংশ, গ্যাসের দাম ১৪৪ শতাংশ, ডিজেলের দাম ৮২ শতাংশ ও পানির দাম তারা বাড়িয়েছে ২৬৪ শতাংশ। পৃথিবীর কোথাও এমনটি নেই। যেখানে জনগণের সরকার থাকে সেখানে এ ধরনের দাম বাড়ানো হয় না। চাল-তেল-আটা-গুড়ো দুধ, শাক-সবজি আজকে মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। আলু-বেগুনসহ সবজির গায়ে হাত দিলে বিদ্যুতের মতো শক করে। ওএমএসের লম্বা লাইনে মধ্যম আয় এবং স্বল্প আয়ের মানুষ দাঁড়িয়ে কিছুটা অল্পমূল্যে পণ্য কিনতে চায়। টিসিবির এ পণ্য সারাদেশে মাত্র ১/২ শতাংশ মানুষকে দিতে পারে। কিন্তু সারাদেশের মানুষ চড়া দামে পণ্য ক্রয় করছে এবং এক বেলা আধাপেট খেয়ে দিন যাপন করছে। আর প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের গল্প শোনাচ্ছেন।
মানুষ একটা ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্নের মধ্যে দিন যাপন করছে দাবি করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ৭২ থেকে ৭৪ সালে আমরা বাসন্তীর কথা শুনেছি, দুর্গার কথা শুনেছি। শাড়ি না পেয়ে মাছ ধরার জাল পড়ে তারা লজ্জা নিবারণ করেছে। ভাত-রুটি না পেয়ে মানুষ আম গাছ, কাঁঠাল গাছের পাতা চিবিয়ে খেয়েছে। আবার সেই পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। আজকে বাংলার প্রান্তর থেকে প্রান্ত দুর্ভিক্ষের ছায়া বিস্তার করছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই দুর্ভিক্ষ, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে জিনিসপত্রে দাম বৃদ্ধি, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে মানুষ আধপেটা থাকে আর দেশের উন্নয়নের নামে লাখ কোটি টাকা পাচার হয়।
‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর বিএনপির অন্যায় অনিয়ম একই বিষয়’ আইনমন্ত্রীর এ বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, উনি ওনার নিজের এলাকায় এ কথা বলেছেন। আমি তাকে বলতে চাই। আপনি প্রধানমন্ত্রীকে বলুন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার কী এবং কত প্রকার। এ তত্ত্বাবধায়কের আন্দোলন করতে গিয়ে মানুষ পুড়িয়েছেন, ঘরবাড়ি ধ্বংস করেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করুন তিনি কী পরিস্থিতি তৈরি করেছেন।
এ সময় বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু ও জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েলসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।