কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, স্বাধীনতার পর সাড়ে সাত কোটি মানুষের খাদ্য যোগান দেওয়া সম্ভব হতো না। খাদ্যের জন্য অন্যের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হতো। আর এখন ১৭ কোটি মানুষের খাদ্য আমরা উৎপাদন করছি। খাদ্যের কোনো সংকট নেই।
বিগত ৫০ বছরে চালের উৎপাদন চারগুণ বেড়েছে। শুধু মোট উৎপাদন নয়, এই ৫০ বছরে উৎপাদনশীলতাও বেড়েছে সাড়ে চার গুণ।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) কৃষিবিদ দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন মন্ত্রী।
এর আগে বিগত ৫০ বছর আগে ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাকৃবির যে চত্বরে এসে কৃষিবিদদের সরকারি চাকরিতে প্রথম শ্রেণির পদমর্যাদার ঘোষণা দিয়েছিলেন, সেই স্মৃতিময় চত্বরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে আনন্দ শোভাযাত্রা শেষে কেক কেটে দিবসটির শুভ উদ্বোধন করেন।
সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদদের মর্যাদা দিয়ে বলেছিলেন, আমার মান রাখিস। এই ৫০ বছরে দেশের কৃষিবিদেরা বঙ্গবন্ধুর সেই আশা পূরণ করেছেন। বর্তমান সরকারের কৃষিবান্ধব নীতির কল্যাণে কৃষিবিদ ও কৃষকের অবদানে দেশের কৃষি আজ নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের ১৭ কোটি মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় কৃষিবিদরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
এ সময় কৃষিবিদ দিবসের সুবর্ণজয়ন্তীতে কৃষিবিদদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস, উৎসাহ এবং উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কৃষিক্ষেত্রে যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে, দেশের কৃষিবিদরা আজকের এই উৎসাহ ও উদ্দীপনা ধারণ করে তা অব্যাহত রাখবে। চাল, ভুট্টা, শাকসবজি, আলু, মাছ, মাংস, দুধ, ডিমসহ কৃষি উৎপাদনের সাফল্যকে আরও বাড়ানো হবে।
পরে কৃষিমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়নুল আবেদীন মিলনায়তনে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম আয়োজিত কৃষিবিদ দিবসের সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
এতে আরও উপস্থিত ছিলেন- সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র ইকরামুল হক টিটু, বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফুল হাসান, বাকৃবি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবুল ফয়েজ কুতুবী, বাকৃবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ইয়াছিন আলী, বাকৃবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. রহমতুল্লাহ, বাকৃবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মো. নজিবুর রহমান, বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক হামিদুর রহমান প্রমুখ।
এ সময় গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সভাপতি আবু হাদী নূর আলী খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাকৃবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমএ সাত্তার মণ্ডল।
প্রসঙ্গত, দিবসটি উপলক্ষে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি ও সেমিনারে সারা দেশ থেকে আসা দুই হাজারের বেশি নবীন ও প্রবীণ কৃষিবিদরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।