প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, পাঁচ সিটি করপোরেশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে উৎসাহিত করবে। কেননা, পাঁচটি সিটি নির্বাচন ভালো হয়েছে।
বুধবার (২১ জন) রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের আগে বড় ভোটের কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করলো নির্বাচন কমিশন। এর আগে খুলনা-বরিশাল ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেছে। কোনো নির্বাচনে বড় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা বা অনিয়মের ঘটনার কোনো অভিযোগ নির্বাচন কমিশনে আসেনি। তবে বরিশাল সিটি নির্বাচনে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিমের হামলার ঘটনা ঘটে। তাকে ঘুষি দিয়ে নাক ফাটিয়ে দিলে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভোটের দিনই দলটি বিক্ষোভ করে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে একজন মেয়র প্রার্থী মারধর করায় নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে, বলা যাবে কি-না জানতে চাইলে ‘উনি কি ইন্তেকাল করেছেন’ মন্তব্য করে নানা মহলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন সিইসি।
এছাড়া গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ভোট শেষ হওয়ার প্রায় নয়ঘণ্টা পর ফলাফল ঘোষণার বিষয়টিকেও অনেকে সন্দেহের চোখে দেখেন। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা ও সাবেক মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলমের মা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে হারিয়ে জয়ী হন।
এই অবস্থায় সিইসির কাছে পাঁচ সিটি ভোটে নিজেদের মূল্যায়ন জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, সার্বিক মূল্যায়নটা হচ্ছে পাঁচটি নির্বাচন ভালো হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনকে উৎসাহিত করবে। ভোটারদের উৎসাহিত করবে। ভোটাররা কেন্দ্রে ভোটকেন্দে যেতে আগ্রহবোধ করবেন। তারপরও ভবিষ্যতেরটা ভবিষ্যতে দেখবো।
তিনি বলেন, আমরা নিশ্চিত করে কিছু বলবো না। জিনিসটা উন্নয়নের দিকে যাচ্ছে, যারা রাজনীতিবিদ, প্রার্থী হবেন, ভোটাররা; তাদের সকলের মধ্যে একটা ইতিবাচক চিন্তা-চেতনা সৃষ্টি হতে পারে। ভোটপ্রদান ও ভোটগ্রহণকে উৎসাহিত করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, শতভাগ ভোট কখনোই নিশ্চিত হয়নি। পৃথিবীর কোথাও শতভাগ ভোট পড়ে না। ৫০ শতাংশ ভোট গুড এনাফ। ৬০-৭০ শতাংশ হলে এক্সিলেন্ট। আমরা চেষ্টা করে যাবো।
রাজশাহী-সিলেট নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন মনিটরিং করেছি দিনভর । সকাল ৮টা থেকে শেষ অব্দি। আমি বলবো নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, আনন্দমুখর পরিবেশ সম্পন্ন হয়েছে। আধাঘণ্টা প্রবল বৃষ্টির কারণে কিছুটা ব্যাঘাত হয়েছে। তবে ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচন হয়েছে। আমরা যে কারণে সন্তুষ্ট বোধ করছি, কোনো রকম অপ্রীতকর ঘটনা ঘটেনি। যেটা নির্বাচনে প্রত্যাশা থাকে, ভোটার অবাধে এসে ভোট দিতে পারেন কি না, সেই প্রশ্নে আমরা বলবো তারা এসেছেন। অবাধে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। কোথাও বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার খবর আমরা পাইনি। আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে নজর রাখছিলাম।
তিনি বলেন, রাজশাহীতে আনুমানিক ৫২ থেকে ৫৫ শতাংশ উপস্থিত হয়েছেন। সিলেটে কমেবেশি ৪৬ শতাংশ উপস্থিতি ছিল বলে জানতে পেরেছি। কিছুটা হেরফের হতে পারে। বাসাইল পৌরসভা নির্বাচনও ভালো হয়েছে। সেখানে ৭০ শতাংশ ভোটার উপস্থিত ছিলেন।
রাজশাহী সিটিতে এক নারী বারবার গোপনকক্ষে প্রবেশ করায় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, সেটা আমরা তদন্ত করবো। সিসি ক্যামেরায় আমরা দেখেছি একজন নারী একাধিকবার ভেতরে যাচ্ছেন। পরে জানতে পেরেছি বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট তাকে তিন দিনের সাজা দিয়েছেন। এটা একটা দৃষ্টান্ত হতে পারে, যে ম্যালপ্র্যাকটিসের জন্য সাজা হতে পারে। তবে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা দেখলেন না কেন, আমরা সেটা তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো।