দেশে প্রথমবারের মত পরীক্ষামূলক চাষ শুরু হয়েছে বিলুপ্তপ্রায় আঙ্গুস মাছের। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপকেন্দ্র থেকে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
ইনস্টিটিউট সুত্রে জানা গেছে, আঙ্গুস মাছ তিস্তা অববাহিকার মাছ। এ মাছটি বর্তমানে বিপন্নের তালিকাভুক্ত। ফলে এ মাছটি সংরক্ষণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কৃত্রিম প্রজনন ও অন-স্টেশন চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। এখন মাঠ পর্যায়ে এর পরীক্ষামূলক চাষাবাদ চলছে। নীলফামারী হতে পরিচালিত একটি গবেষণা প্রকল্পের আওতায় বৈরালী মাছের সাথে বিলুপ্তপ্রায় আঙ্গুস মাছের মিশ্রচাষ করা হচ্ছে। চাষীর পুকুরে মাছের দৈহিক বৃদ্ধির হার এবং পানির ভৌত -রাসায়নিক গুনাগুণ নিয়মিত গবেষকরা মনিটর করছে।
মাছের বৃদ্ধির হার সন্তোষজনক জানিয়ে চাষী কদর বানু বলেন, আঙ্গুস মাছ খেতে সুস্বাদু ও আকর্ষণীয় এবং এ মাছটি মুলত উত্তরবঙ্গে পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ জানান, আঙ্গুস মাছ মুলত তিস্তা অববাহিকার মাছ। এ মাছটি প্রায় হারিয়ে যাচ্ছিল। এর কৃত্রিম প্রজনন প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হওয়ায় পোনা প্রাপ্তি সহজ হয়েছে এবং এই মাছটিও শীঘ্রই চাষাবাদে চলে আসবে।
তিনি বলেন, বিলুপ্তপ্রায় সকল দেশীয় মাছকে খাবার পাতে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ইনস্টিটিউট থেকে গবেষণা পরিচালনা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, দেশের বিলুপ্তপ্রায় মাছ সংরক্ষণে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ইতোমধ্যে অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে। দেশের বিলুপ্তপ্রায় ৬৪ প্রজাতির মাছের মধ্যে এ প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে ৪০ প্রজাতির মাছকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। এরমধ্যে ইনস্টিটিউট এর বর্তমান মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ এর নেতৃত্বে এবং বর্তমান সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় গত ১৩ বছরেই ২৬টি বিপন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। ফলে বাজারে সাম্প্রতিককালে ছোট মাছের প্রাপ্যতা বেড়েছে এবং গত ১৩ বছরে চাষের মাধ্যমে ছোট মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৪ গুণ।
অপরদিকে, দেশীয় মাছ সুরক্ষায় ইনস্টিটিউট এর ময়মনসিংহ কেন্দ্রে দেশে প্রথমবারের মত একটি লাইভ জীন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।