সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণের এক দফা দাবিতে ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ অভিমুখে বিএনপির রোডমার্চ শুরু হয়েছে।
রোববার (১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার বগারবাজার এলাকায় স্থাপন করা মঞ্চ সমাবেশ থেকে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। তার বক্তব্য শেষে সেখান থেকে কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে গাড়ি ছাড়ে।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আবদুল মঈন খান বলেন, এই সরকার গণতন্ত্রের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছে। তারা মানুষকে কোনো ভিন্নমত প্রকাশ করতে দেয় না। আওয়ামী লীগ যেটা বলবে দেশের ১৮ কোটি মানুষ তাই শুনবে এটা হতে পারে না। এই বাংলাদেশের মানুষ ক্ষুধার তোয়াক্কা করে না। তারা গণতন্ত্রের অধিকার চায়।
তিনি আরও বলেন, আমরা রাস্তায় নেমেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে না পারব এবং জনগণের প্রতিনিধিত্বহীন এই সরকার স্বেচ্ছায় বিদায় না নেবে ততক্ষণ পর্যন্ত এই রাজপথ ছেড়ে যাব না। এই সরকারের ক্ষমতায় থাকার আর কোনো অধিকার নেই। যত তাড়াতাড়ি তারা ক্ষমতা থেকে বিদায় নেবে বাংলাদেশের জন্য ততই মঙ্গল হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আন্দোলন ক্রমান্বয়ে জোরদার হবে। কারণ মানুষ বাঁচতে চায়। জিনিসপত্রের দাম যে হারে বাড়ছে, তাতে এই দেশের মানুষের আর বাঁচার উপায় নেই। যদি বাঁচতে চান এবং নিজের ভোট নিজে দিতে চান তাহলে নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আগামী দিন লড়াই হবে, সবাই মিলে লড়াই গড়তে হবে এবং তাতে আমাদের জিততে হবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। সমাবেশে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রোডমার্চ বাস্তবায়নের সমন্বয়কারী সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ওয়ারেস আলী মামুন, শরীফুল আলম প্রমুখ।
এর আগে, সকাল ৯টা ৪৩ মিনিটে কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় রোডমার্চের আনুষ্ঠানিকতা। রোডমার্চে অংশ নিতে সকাল থেকেই ত্রিশালের বগারবাজারে সমাবেশস্থলে আসেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। সমাবেশ শেষে সেখান থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এ রোডমার্চ শুরু হয়। এতে নেতৃত্ব দেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খান। রোডমার্চ শুরুর পর সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ও বাজারে রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে সমর্থন জানাচ্ছে এবং রোডমার্চে যুক্ত হচ্ছেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, বগারবাজার থেকে রোডমার্চটি কিশোরগঞ্জ বাইপাসে গিয়ে শেষ হবে। ১১৪ কিলোমিটার এ রোডমার্চে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চুরখাই, ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের চায়না মোড়, শম্ভুগঞ্জ, ঈশ্বরগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জে সভা হবে। দলের নেতাকর্মীরা বলছেন, দুই হাজারের বেশি গাড়িবহরে ১৫ হাজারের মতো নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে হচ্ছে এই রোডমার্চ। ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোণা ও শেরপুরের নেতাকর্মীরা এতে অংশ নিয়েছেন।