মামলাজট কমানোর লক্ষ্যে বিচারকের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং নতুন আদালত প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টিও সরকারের বিবেচনায় রয়েছে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে আইনমন্ত্রী এ তথ্য জানান। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
আনিসুল হক বলেন, দেশের মামলাজট কমানোর লক্ষ্যে বিচারকের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং নতুন আদালত প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সম্প্রতি সহায়ক জনবলসহ ৪৭টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, ৭টি সাইবার ট্রাইব্যুনাল, ৭টি মানব পাচার ট্রাইব্যুনাল, ৭টি সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, গাজীপুর ও রংপুর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ২টি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ৩০টি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও ২২টি জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ৬২টি অতিরিক্ত জেলা জজ আদালত ও ১১টি অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত, পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলায় ১টি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও ১টি সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, গাজীপুর, রংপুর ও বরিশালে ৩টি মহানগর দায়রা জজ আদালত, ৩টি অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত ও ৩টি যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালত সৃজন করা হয়েছে।
এছাড়া, ১১টি যুগ্ম জেলা জজ, ৩৪টি যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ ১৭টি অর্থঋণ আদালত, ২১৪টি সহকারী জজ আদালত, ১৩টি ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল, ৫৪টি ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনাল, চট্টগ্রাম জেলায় ৩টি অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, ১০টি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ৭টি অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এবং মাদক সংক্রান্ত মামলা বিচারের জন্য স্বতন্ত্র ৩০টি অতিরিক্ত জেলা জজ, ২৪টি অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ, ৬৬টি যুগ্ম জেলা জজ ও ৩২টি যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালত সৃজনের প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান আইনমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বিচার কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিচারকের নতুন পদ সৃজনে বর্তমান সরকার কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারের আন্তরিক উদ্যোগের কারণেই অধস্তন আদালতে বিভিন্ন পদমর্যাদার ৩৫৯টি বিচারকের পদ সৃজন করা হয়েছে। আদালতসমূহ যাতে সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারে সেজন্য ১৯৯৯টি সহায়ক পদ সৃজন করা হয়েছে। অপরদিকে ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে চারদলীয় বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে মাত্র ২৫টি বিচারকের পদ এবং ১৩৩টি সহায়ক জনবলের পদ সৃজন করা হয়। ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত অধস্তন আদালতে মোট ১,৪২৬ জন বিচারক (সহকারী জজ) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পক্ষান্তরে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত চারদলীয় বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে অধস্তন আদালতে মাত্র ১৯০ জন বিচারক নিয়োগ করা হয়েছিল।
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ষোড়শ বিজেএস-এর মাধ্যমে ১০৪ জন বিচারক নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন সুপারিশ প্রদান করছে। আরও ১০০ জন বিচারক নিয়োগ পরীক্ষার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে।