পেনশন, কোটাব্যবস্থাসহ অন্যদের বিভিন্ন আন্দোলনে যুক্ত হয়ে রাজনীতিতে বিএনপি পরজীবী হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে সাপ্তাহিক গণবাংলা ও বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারসাম্যের পররাষ্ট্রনীতি ও দেশের অভাবনীয় উন্নয়ন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আন্দোলনের গতি হারিয়ে বিএনপি এখন পরজীবী দল হয়ে গেছে। তারা এখন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ভর করে, শিক্ষকদের আন্দোলনে ভর করে। নিজেরা আন্দোলন করার ক্ষমতা হারিয়ে পরাশ্রিত আন্দোলন করছে। আর বিএনপিতে এখন ‘তারেক ভূত আতঙ্ক’ বিরাজ করছে। দলটির কর্মীরা এখন আতঙ্কে থাকে, সকালবেলা উঠে দেখবে কি না যে পদ চলে গেছে!’
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের পর বিএনপির নানা মন্তব্য প্রসঙ্গে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি সরকারের উন্নয়নের ফলভোগ করেও সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে। ফ্লাইওভার দিয়ে ১০ মিনিটে এয়ারপোর্ট নেমে বলে দেশে উন্নয়ন হয়নি। মেট্রোরেলে এসিতে চড়ে প্রেসক্লাবের সামনে নেমে সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কথা বলে। প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত সফল ভারত সফরের পর বিএনপির নানা মন্তব্য হালে পানি পায়নি, এখন প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের পর বিএনপি কি বলবে সেটিই দেখার বিষয়।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, আমাদের সঙ্গে যেমন ভারতের চমৎকার সম্পর্ক, তেমনি চীনের সঙ্গেও সুসম্পর্ক। আমাদের সঙ্গে রাশিয়ার যেমন চমৎকার সম্পর্ক, তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও সুসম্পর্ক।
তিনি বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব রেখে এগিয়ে যাওয়া দুরূহ বিষয়, সহজ নয়। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ এই নীতিতে এগিয়ে চলেছেন।
প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে রেল ও সড়ক যোগাযোগ নিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ইউরোপে কোনো সীমান্ত চৌকি নেই। সেখানে কী দেশগুলোর সার্বভৌমত্ব নষ্ট হয়ে গেছে? আমরা কানেক্টিভিটি বাড়ানোর জন্য ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন সমঝোতা করেছি। নেপালের সঙ্গেও কানেক্টিভিটি হবে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের সঙ্গেও অর্থাৎ আমরা ‘রিজিওনাল কানেক্টিভিটি’ বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি।
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে মন্ত্রী ড. হাছান বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়েই সরকার কোটা ব্যবস্থা বাতিল করেছিল। এটি হয়েছিল আদালতের মাধ্যমে। যেহেতু শিক্ষামন্ত্রীসহ দায়িত্বশীলরা বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন, আশা করি এর একটি সুন্দর সমাধান আসবে।
আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিমের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদের সম্পাদক মো. শাহাদাত হোসেন টয়েলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব শফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য উপকমিটির সদস্য লায়ন মশিউর আহমেদ প্রমুখ।