বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত দানাদার ইউরিয়া সার প্রয়োগযন্ত্রের মাঠ দিবস বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) গাজীপুর সদর উপজেলার ভারারুলে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে যন্ত্রটির উদ্ভাবনী প্রযুক্তির কার্যকারিতা প্রদর্শন করা হয়। এ সময় বক্তারা ব্রি উদ্ভাবিত দানাদার ইউরিয়া সার প্রয়োগযন্ত্রকে কৃষি উন্নয়নে নতুন সম্ভবনা হিসেবে উল্লেখ করেন।
বক্তারা বলেন, ব্রি উদ্ভাবিত দানাদার ইউরিয়া সার প্রয়োগযন্ত্র দেশের কৃষি খাতে সারের অপচয় কমিয়ে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
ব্রি’র মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও খামার যন্ত্রপাতি ও ফলনোত্তর বিভাগের (এফএমপিএইচটি) প্রধান ড. মোঃ দুররুল হুদা এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রির পরিচালক (প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা) ড. মো. আব্দুল লতিফ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম খান। সন্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্রির মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম।
ডিপিইউএপি প্রকল্প, এনসিসি ব্যাংক এর অর্থায়নে এবং এফএমপিএইচটি বিভাগের আয়োজনে অনুষ্ঠিত মাঠ দিবসে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্পের পরিচালক ড. মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান মিলন। অনুষ্ঠানে ব্রির পরিচালক (প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা) ড. মো. আব্দুল লতিফ বলেন, “ব্রি দানাদার ইউরিয়া সার প্রয়োগযন্ত্র সারের অপচয় কমিয়ে কৃষকদের উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর পাশাপাশি পরিবেশ সংরক্ষণেও ভূমিকা রাখছে। এই প্রযুক্তি টেকসই কৃষি নিশ্চিত করতে একটি যুগান্তকারী উদ্ভাবন।”
প্রকল্পের পরিচালক ড. মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান মিলন জানান, “এনসিসি ব্যাংকের কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি (সিএসআর) কর্মসূচির আওতায় দেশের চারটি কৃষি পরিবেশ অঞ্চলে এই যন্ত্রের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য গবেষণা চলছে। মাটির ৭-৮ সেন্টিমিটার গভীরে সরাসরি ইউরিয়া প্রয়োগ করলে সারের প্রায় ৪০ শতাংশ সাশ্রয় হয়, যা অর্থনৈতিকভাবে কৃষকদের সহায়তা করে। পাশাপাশি, মাটির গভীরে সার প্রয়োগের ফলে নাইট্রাস অক্সাইড নির্গমন হ্রাস পায়, যা পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি একটি ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তি; ধান চাষে গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ রোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম” অনুষ্ঠানে স্থানীয় কৃষকরা মাঠ দিবসে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। কৃষক নিখিল চন্দ্র বলেন বলেন, “ব্রি দানাদার ইউরিয়া সার প্রয়োগযন্ত্র ব্যবহার করার পর জমিতে সারের অপচয় কমেছে ৩০-৪০ ভাগ, আগে বিঘা প্রতি সার দিতাম ৩ বাড়ে ২৪ কেজি, এবার যন্ত্রের সাহায্যে সার দিছি ১ বার ১৬ কেজি এবং এতে ফলন বেড়েছে বিঘা প্রতি ১/২ মন। এটি আমাদের খরচও সাশ্রয় করেছে।”
উল্লেখ্য, প্রতি ঘণ্টায় ১ বিঘা জমিতে সার প্রয়োগ করতে সক্ষম এই যন্ত্রটি সহজে ব্যবহারযোগ্য। সাশ্রয়ী মূল্যে মাত্র ১০হাজার টাকায় এটি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।