জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে একটি মোহল দেশের গণতন্ত্রকে গভীর অন্ধকারে ডুবিয়ে দিয়েছিলো বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান। তিনি বলেন, ১৯৮১ সালের ১৭ মে মুজিব কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিরে দিক হারা বাংলাদেশকে আলোর পথে ফিরিয়েছেন। তিনি ফিরে আশায় দেশে গণতন্ত্রের পুনর্জন্ম হয়েছিল।
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে সোমবার (১৭ মে) রাজধানীর গুলিস্তানস্থ মহানগর নাট্যমঞ্চে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সীমিত পরিসরে এক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে এসেছিল বলেই, আজ বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে আবদুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশে ফেরার খুশিতে লক্ষ লক্ষ মানুষের ঢল নামে। সেদিন শেখ হাসিনাকে পেয়ে তারা বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তসূরি পেয়েছিল। সকল শ্রেনী-পেশার মানুষ ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিমানবন্দরে এসেছিল বঙ্গবন্ধুকন্যাকে স্বাগতম জানাতে। দীর্ঘ অপেক্ষার পর সেদিন শেখ হাসিনা বাঙলার মাটিতে পা রেখে শপথ করে বলেছিলেন, আমার জীবন যদি আমার পিতার মতোও হয়, তবুও আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবো। সেদিনের সেই শপথের পথেই আজ শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন, পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আজ বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।
ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আবদুর রহমান আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সারাজীবনের রাজনীতির সু-ফল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। কিন্তু ৭৫’ এ ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধীরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে পাকিস্তানে পরিনত করা হয়েছিল। অথচ এই দেশকে স্বাধীন করার জন্য বাঙালীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। যে জয় বাংলা ধ্বনিতে বাঙালীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধে রণাঙ্গনে গিয়েছিল, যে জয় বাংলা ধ্বনী পুরো বাঙালী জাতিকে পরাধীনতা থেকে মুক্ত করেছিল, সেই জয় বাংলা ধ্বনীকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জিন্দাবাদ প্রতিষ্ঠা করেছিল। সেদিন আমরা যারা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম করেছিলাম, কিন্তু সেদিন স্বাধীনতা বিরোধীদের দ্বারা আমাদের উপর অত্যাচার করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে উল্লেখ্য করে তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে। এটা আমাদের জন্য খুশির। এটা বাঙালী জাতির জন্য একটা প্রাপ্তির। যুদ্ধ অপরাধিদের বিচার হয়েছে। এর থেকে কিছুই প্রাপ্তির হতে পারে না।
খুনি জিয়াউর রহমানের বিচার করতে হবে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান আরও বলেন, সরকারের কাছে আমাদের একটি প্রার্থনা রইলো, আজ যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধু খুনিদের বিচার হয়েছে, কিন্তু যার কলকাঠিতে এই নিষ্ঠুর খুন হয়েছে, যার নেতৃত্বে বাঙলার মাটি রক্তের দাগে লালে লাল হয়েছিল, সেই খুনি জিয়াউর রহমানের বিচার আমরা চাই। আজকের দিনে এটাই আমাদের প্রার্থনা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, আফম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবু আহমেদ মান্নাফী, সাধারণ সম্পাদক মোঃ হুমায়ুন কবির অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।