সংলাপ ভালো, কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংলাপের টেবিলে বসে আসেনি: হুইপ স্বপন

জাতীয় সংসদের হুইপ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেছেন, নিঃসন্দেহে রাজনীতিতে সংলাপ, গোলটেবিল, আলোচনা ভালো বিষয়, কিন্তু সংলাপের টেবিলে বসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আসেনি। আজকে বিশ্বসেরা রাষ্ট্রনেতা শেখ হাসিনার ভিশনারী নেতৃত্বে বাংলাদেশের যে অর্থনৈতিক উত্থান এবং দারিদ্র্য বিমোচনে ঈর্ষণীয় সাফল্য তা সংলাপের টেবিলে বসে অর্জিত হয় নি। জঙ্গীবাদ- সন্ত্রাসবাদ, উগ্র সাম্প্রদায়িকতা প্রতিহত করে বাংলাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা সংলাপের টেবিলে বসে সাধিত হয় নি।

আজ শনিবার (৮ জুলাই) জয়পুরহাট-২ নির্বাচনী এলাকার আক্কেলপুর উপজেলায় ১০ টি গ্রামীণ রাস্তা পাকাকরণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত ভিন্ন ভিন্ন দোয়া মাহফিল ও জন-আকাঙ্ক্ষা বিষয়ক মত বিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আজকের বিশ্ব বাস্তবতায় প্রতিটি রাষ্ট্র একযোগে সুন্দর পৃথিবী প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করা আবশ্যক। কিন্তু কোন স্বাধীন, সার্বভৌম এবং শান্তিকামী রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অতিরিক্ত নাক গলানো উপনিবেশবাদী আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। অসৌজন্যমূলক ও কূটনৈতিক শিষ্ঠাচার বহির্ভূত আচরণ আক্রান্ত রাষ্ট্রটির সার্বভৌমত্ব ও মর্যাদা হানি করে। আজকের গ্লোবাল ভিলেজে অবশ্যই এক রাষ্ট্র অপর রাষ্ট্রকে বন্ধুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদান করতে পারেন, তবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে জোটবদ্ধ হয়ে মিডিয়ায় সোরগোল পাকিয়ে পাবলিকলি কোন রাষ্ট্রকে হেয় প্রতিপন্ন করা শিষ্ঠাচারের সীমানা অতিক্রম করে।

তিনি আরও বলেন, আপনারা আমাদের মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের ছবক দিতে চান, নিরপেক্ষ নির্বাচন চান, মত প্রকাশের স্বাধীনতা চান। আমরা স্বাগত জানাই। আসুন, বসুন, আলোচনা করুন। নির্বাচনে যতখুশী পর্যবেক্ষক পাঠান। সবাই সরেজমিন নির্বাচন দেখুন। তারপর মন্তব্য করুন নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ হয় কি না। তার আগে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের আশা- আকাঙ্ক্ষার প্রতি অসম্মান করবেন না।

হুইপ স্বপন বলেন, মানবাধিকারের ছবক দেওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্র- কানাডাকে আমাদের জাতির পিতা, নারী ও শিশুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের ফেরত দিতে বলুন। যুক্তরাজ্যেকে ৭১-এর নরঘাতক যুদ্ধাপরাধী এবং গ্রেণেড হামলা করে ২৪ জন বাংলাদেশের নাগরিক হত্যাকারী, এফবিআই কর্তৃক স্বীকৃত দূর্নীতিবাজকে বাংলাদেশে ফেরত দিতে বলুন। জঙ্গীবাদের পৃষ্ঠপোষকদের সঙ্গে সখ্যতা বর্জন করুন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভূ- রাজনৈতিক গুরুত্ব আপনাদের অনুধাবন করতে হবে। গভীরে প্রবেশ করে পর্যালোচনা করতে হবে। চায়নার সঙ্গে আপনাদের স্নায়ুযুদ্ধের অংশীদার আমরা নই। আপনারা জানেন কি না, চায়না আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী গণহত্যাকারীদের সহায়তা করেছে, ১৯৭৫ সালে আমাদের জাতির পিতার নৃশংস হত্যার পূর্ব পর্যন্ত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় নি। এরপরও আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অহিংস পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে চায়নার সঙ্গে কেবলমাত্র অবকাঠামো উন্নয়নগত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অব্যাহত রেখেছি।

দোয়া মাহফিল এবং মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ মোকছেদ আলী, উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম আকন্দ, জয়পুরহাট জেলা চেম্বার সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব আহসান কবীর এবলব, পৌর মেয়র শহীদুল আলম, আওয়ামী লীগ নেতা মাহফুজা সুলতানা মলি, মজিবর রহমান, আতিকুর রহমান মিঠু, আছিয়া খাতুন শম্পা, বেলাল হোসেন, মাজহারূল আনোয়ার লিটন, গোলাম মোস্তফা, আব্দুর রশিদ চেয়ারম্যান, সজল চেয়ারম্যান প্রমুখ।