সিন্ডিকেটের পাল্টা সিন্ডিকেটও ব্যাকফুটে, ছাত্রলীগের নেতৃত্ব বাছাইর দায়িত্বে সভাপতিমণ্ডলীর একজন
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৯ তম জাতীয় সম্মেলন পেরিয়েছে দশদিন হলেও এখনও নতুন কমিটি ঘোষণা হয়নি। গত ১২ মে সম্মেলনের শেষ ও দ্বিতীয় পর্বে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন ঘোষণা দেন, “আগামী দু-এক দিনের মধ্যে ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্বের নাম জানানো হবে”। ঘোষণা মোতাবেক নতুন কমিটি ঘোষণা না হওয়ায় নানা আলোচনা ও বিশ্লেষণ শুরু হেয়েছে দেশের অন্যতম প্রধান এই ছাত্র সংগঠনকে ঘিরে।
ছাত্রলীগের গত তিনটি সম্মেলনে (২০০৬, ২০১১ এবং ২০১৫) কথিত সিন্ডিকেট যাদেরকে মনোনয়ন দিয়েছেন তারাই নির্বাচিত হয়েছেন ছাত্রলীগের শীর্ষ পদ দুটিতে।
সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি চাই ত্যাগী, যোগ্য নেতৃত্ব। কারও পকেটের কমিটি দিয়ে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব হবে না। কোনো সিন্ডিকেট দ্বারা ছাত্রলীগ চলবে না। ছাত্রলীগ চলবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে শেখ হাসিনার নির্দেশনায়। এর বাইরে কোনো ভাবনাচিন্তা করার অবকাশ নেই।’
আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র জানায়, কথিত সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য একমত থাকলেও নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের নেতৃত্বে আনতে সিন্ডিকেট বিরোধীদের মধ্যেই আবার সিন্ডিকেট গড়ে উঠে। নতুন দায়িত্বপ্রাপ্তরা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নেতৃত্বে আনতে নানাভাবে চেষ্টা শুরু করেন। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের পরবর্তী নেতৃত্ব বাছাই করতে দলটির একজন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যকে দায়িত্ব দিয়েছেন বলে আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত এই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য যুক্ত হওয়াতে অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন হবে বলে জানা গেছে। সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসে পরবর্তীতে মূল দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে দলীয় সভাপতির আস্থা অর্জন করেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের নেতৃত্ব প্রত্যাশীদের সম্পর্কে বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ খবরও নিয়েছেন। তাদের সঙ্গে আদালা ভাবে কথা বলারও কথা রয়েছে। তবে সেটা কবে এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।
জানা গেছে: ৫ জুন আওয়ামী লীগ সরকারের বর্তমান মেয়াদের শেষ বাজেট। এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ব্যস্ত রয়েছেন। আবার সামনে নির্বাচন। তাই দ্রুত সময়ে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব যোগ্য হাতে তুলে দিতে সভাপতিমণ্ডলীর ওই সদস্যকে দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলন শুরুর আগ থেকেই এবারের সম্মেলনকে ঘিরে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এবং বিশেষ করে কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার আগ্রহ স্পষ্ট ছিলো। ছাত্রলীগকে তথাকথিত সিন্ডিকেট প্রথা থেকে বের করে এনে নতুন করে সাজানোর ঘোষণাও ছিলো। সে লক্ষ্যে ২০০৬ সাল থেকে চলে আসা সরাসরি ভোট প্রথা থেকে বের হয়ে এসে, এবার সমঝোতার ভিত্তিতে নেতৃত্ব বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয় আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। কিন্তু সাবেক ছাত্র নেতৃত্ব দুই ভাগে ভাগ হয়ে যাওয়ায় এখন পর্যন্ত কমিটি ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি। উল্লেখ্য এবারের ছাত্রলীগের একই সঙ্গে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে যারা যারা থাকবেন তাদের নামসহ কমিটি প্রকাশের সম্ভবনা রয়েছে।