বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক ‘দ্বিচারী নীতির’ সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদ ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব আপনি তো বড় বড় কথা বলেন। কিন্তু মনে রাখবেন, আপনিও (ফখরুল) রাজনীতির কাক। কারণ আপনি করতেন বামপন্থি দল। সেখান থেকে ডানপন্থি বিএনপিতে চলে গেলেন। অর্থাৎ আপনি আপনার নীতি বাদ দিয়ে ক্ষমতার উচ্ছিষ্টের লোভে বিএনপিতে গেছেন। আরও অনেকের নাম বলতে পারি, এরা রাজনৈতিক কাক। এই রাজনৈতিক কাকের সমন্বয়ের দল হচ্ছে বিএনপি। আজকে এই দল নানা কথা বলে।’
তিনি বলেন, ‘রাস্তায় যেমন খাবারের উচ্ছিষ্ট ছিটিয়ে দিলে অনেক কাক এসে জড়ো হয়, তেমনি জিয়াউর রহমান একইভাবে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দিয়ে রাজনীতির কাক জড়ো করেছিলেন। তাদেরই একজন মির্জা ফখরুল।’
সোমবার (২৩ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের ৯৩তম জন্মকার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানে ওপর ছাত্রলীগ নয়, দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ছাত্রলীগের ওপর এ হামলার দায় চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এখন অবস্থা এরকম কোনও গাড়ি যদি এক্সিডেন্ট হয় সেটার কারণেও ছাত্রলীগের ঘাড়ে দায় দেয়া হচ্ছে। সবকিছুই যেন ছাত্রলীগের জন্য।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা আজকের পত্রিকার বড় খবর। এই হামলাকে আমি অবশ্যই সমর্থন করি না। কিন্তু মাহমুদুর রহমান, উনি কে? কাবা শরীফের ছবি বিকৃত করে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের অনুভূতিতে আঘাত আনার জন্য সাঈদীর ছবি সহ আরও অনেকের ছবি জুড়ে দিয়েছিল। তিনি বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর পরিবারকে নিয়ে যেই অকথ্য, অশালীন ভাষায় কথা বলেছেন তিনি আবার একটি পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক।’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি কোনও ইস্যু পায় না। কোটা আন্দোলন নিয়েছিল, কোটা আন্দোলন এখন আর হালে পানি পাচ্ছে না। এখন মাহমুদুর রহমানকে নিয়ে নেমেছে। আজকে দেখলাম ফখরুল সাহেব প্রেসক্লাবে এসেছেন। তিনি কি বলেছেন জানি না। তবে কয়েকটা দিন এই ইস্যুতেই তারা সভা সমাবেশ গরম করবেন। আমি আপনাদের অনুরোধ জানাবো এই সমস্ত ব্যক্তিবর্গের হাত থেকে বিএনপিকে রক্ষা করুন।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে দুই ধরনের বিএনপি নেতা আছে। বিএনপি বাই চান্স আর বিএনপি বাই এক্সিডেন্ট। বিএনপি বাই চ্যান্স মানে তারা কোনো না কোনো ঘটনার কারণে বিএনপি হয়ে গেছেন। বাই এক্সিডেন্ট হলো অনেকেই আওয়ামী লীগের নমিনেশন চেয়েছিল, পায় নাই। তাই বিএনপিতে চলে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন পত্রিকার সম্পাদকও এরকম দেখা গেছে সম্পাদক বাই চ্যান্স অথবা সম্পাদক বাই এক্সিডেন্ট। সুপ্রিম কোর্টে আপিল বিভাগের প্রধান বিচারপতি এই মাহমুদুর রহমান সম্পর্কে বলেছেন, এডিটর বাই চ্যান্স। সুতরাং এরা হচ্ছে মুখোশধারী দুষ্কৃতিকারী। মাহমুদুর রহমান সাহেবরা হচ্ছেন সুবেশধারী দুষ্কৃতিকারী।’
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে এই নেতা বলেন, ‘আপনারা নির্বাচনে যাবেন এতদিন বলেছিলেন। এখন আবার বলছেন খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাবেন না। গতবার নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফাঁসির দড়ি ঝুলিয়েছেন। আর এবার নির্বাচনে না গেলে ফাঁসি হয়ে যাবে। ফাঁসি থেকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না। সুতরাং আমি অনুরোধ জানাবো আপনারা সিদ্ধান্ত নেন, খালেদা জিয়া বড় না বিএনপি বড়। তারেক রহমানের মতো দুষ্কৃতিকারী বড় না বিএনপি বড়। আমি আশা করবো আপনারা বিএনপিকে রক্ষা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।’
আয়োজক কমিটির উপদেষ্টা চিত্তরঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মুকুল বোষ প্রমুখ।