তারেককে সরাতে আওয়ামী ইচ্ছা পূরণ হয়নি, হবেও না’

রাজনীতি থেকে তারেক রহমানকে সরিয়ে দিতে আওয়ামী লীগের ইচ্ছা কখনও পূরণ হবে না বলে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সরকারের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে ইন্টারপোল তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় রেড এলার্ট জারি করেছিল। পরবর্তীতে ইন্টারপোলের প্রধান কার্যালয় প্রয়োজনীয় তদন্ত করে প্রাসঙ্গিক বিষয়ে তারেক রহমানের কোনো সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ না পেয়ে গত ২০১৬ সালের ১৪ মার্চ লিখিতভাবে সেই রেড এলার্ট প্রত্যাহার করে। রাজনৈতিক কারণে তারেক রহমানকে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে সরিয়ে দেয়ার আওয়ামী ইচ্ছা পূরণ হয়নি- হবেও না ইনশাআল্লাহ।’

একুশে আগস্টের রায় নিয়ে নতুন সংকট সৃষ্টির পরিবর্তে সরকারের ইতিবাচক উদ্যোগ নেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।

সোমবার (২৭ আগস্ট) সকালে নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার তাদের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন ও দুর্বল করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতেই দলীয় একজন নেতাকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করে মামলার অন্যতম আসামিকে দিয়ে জোর করে স্বীকারোক্তি আদায় করেছিল। কিন্তু সেই স্বীকারোক্তি প্রত্যাহার করে মুফতি হান্নান সরকারের ষড়যন্ত্র ফাঁস করে দিয়েছে। এখন তারা বিচার বিভাগকে দিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক ইচ্ছা পূরণের অপচেষ্টায় রত হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

মহাসচিব বলেন, ‘২০১১ সালে পুলিশ রির্পোট পেশ হওয়ার আগেই তৎকালীন আইন প্রতিমন্ত্রী প্রকাশ্যে জনসভায় ঘোষণা করেছিলেন যে- গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানকে জড়িত করা হবে। হয়েছেও তাই। অর্থাৎ মামলার তদন্তকারীদের উপরেও সরকারের প্রভাবের মাত্রা কতটা তা বোঝা যায়।’

মির্জা ফখরুল প্রশ্ন রাখেন, ‘সরকারি দলের সাধারণ সম্পাাদক মামলার রায় হওয়ার আগে কিভাবে বলতে পারেন যে, এই মামলার রায় হওয়ার পর বিএনপি নেতৃত্ব সংকটে পড়বে। এর অর্থ হলো তিনি জানেন যে, কি রায় হতে যাচ্ছে।’

ফখরুল বলেন, ‘যেদেশে তারেক রহমানকে নির্দোষ ঘোষণার পর বিচারিক আদালতের বিচারককে দেশত্যাগে বাধ্য হতে হয় এবং নিম্ম আদালতকে প্রশাসনের অধিনস্থ রাখার সরকারি অপচেষ্টার বিরোধীতা করার কারণে দেশের প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগ ও দেশত্যাগে বাধ্য হতে হয়। সেদেশে এটাই তো স্বাভাবিক। কোন রায় কবে হবে সেটা এখন বিচারক নয় আইনমন্ত্রী স্থীর করেন। বিচার বিভাগের উপর কতচা নিয়ন্ত্রণ থাকলে এটা তিনি করতে পারেন তা সহজেই বোধগম্য।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জাতীয় রাজনীতিতে এর বিষময় পরিণতি সম্পর্কে ফের ভাবার জন্য সরকারকে পরামর্শ দিচ্ছি। অন্যায়ভাবে মিথ্যা অভিযোগে খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দিয়ে সরকার জনগণকে ক্ষুব্ধ করেছে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেশে জনগণের মধ্যে দারুন ক্ষোভের সৃষ্টি করবে, যা কারো জন্যই প্রত্যাশিত নয়। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যমান সব সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানকে দেশের স্বার্থে একান্ত প্রয়োজনীয় মনে করি। নতুন সংকট সৃষ্টির পরিবর্তে সরকারের উচিত বিদ্যমান সমস্যাদি সমাধানের উদ্দেশ্যে ইতিবাচক উদ্যোগ নেয়া।’

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন প্রমুখ।