ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্যে ভবিষ্যদ্বাণী করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, ‘একাদশ জাতীয় নির্বাচনের কালো অধ্যায়ের সত্য ইতিহাস আগামী প্রজন্ম একদিন জানবে। সেদিন আওয়ামী লীগকে ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে।’
রবিবার (২৭ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে কোকোর ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
আলাল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জানে তারা যদি পরাজিত হয় তাহলে পিলখানা হত্যা মামলা, বাংলাদেশ ব্যাংক লুট, সাগর-রুনি হত্যার মূল কারণ বেরিয়ে আসবে। রমনা বটমূলে বোমা হামলা, নানিয়ারচরে বোমা হামলা মামলার আসামি হয়ে তাদেরকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। আর এসব থেকে বাঁচতেই নোংরা খেলা খেলছে সরকার।’
বাংলাদেশে রাজনীতির বিস্ময়কর পরিবর্তন ঘটেছে উল্লেখ করে যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘অনেকেই ৭১’র কথা, ৮৬’র কথা, ২০০১ এর কথা বলেন। কিন্তু সেসব পরিস্থিতির সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি মিলবে না। মোটাদাগে যে দুটি বিষয়কে আমরা চিহ্নিত করি তার একটি হচ্ছে নির্বাচন। এ নির্বাচন জাতীয় ঐক্য ও ২০ দল বনাম ১৪ দলের সঙ্গে না। এটা হয়েছে ২০ দল তথা ঐক্যফ্রন্ট বনাম নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, বিচার বিভাগ, আওয়ামী লীগ ১৪ দলের ক্যাডার বাহিনীর নির্বাচন। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থকরাও ভোট দিতে পারেনি। তাদের ভোট দেয়া লাগেনি।’
তিনি বলেন, ‘একাদশ নির্বাচনে শুধু বিএনপি পরাজিত হয়েছে তা নয়। এই নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে দেশের জনগণ, গণতন্ত্র। এই নির্বাচনে দেশকে একটি অন্ধকারের দিকে ধাবিত করা হয়েছে। দেশে একটি কলঙ্কময় অধ্যায় সৃষ্টি করা হয়েছে। ইতিহাস হয়তো একদিন সত্য প্রকাশ করবে।’
আলাল বলেন, ‘যশোরে আওয়ামী লীগের এমপির বাসায় কারা যেন বোমা হামলা করেছে। আওয়ামী লীগের পেট্রোল হাউসে, আওয়ামী লীগের বাসায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাদের বাসায় বাসায় বোমা হামলা হয়েছে। ভারতীয় বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। র্যাব বলছে তদন্ত চলছে। কিন্তু আমরা আশঙ্কা করছি ভবিষ্যতে উপজেলা নির্বাচনে জাতীয় নির্বাচনের মত একই ঘটনা ঘটাবে। তাই আমি বলবো- পুলিশ, র্যাব যারা অতি উৎসাহী কর্মকর্তা তারা যেন জনসাধারণের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন।’
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অনুগ্রহজীবীদের হায়ার করতে হবে মন্তব্য করে বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আগামী উপজেলা নির্বাচনে শুধু বিএনপি নয়, বাম জোট, ইসলামী আন্দোলন, চরমোনাই কেউ অংশ নেবে না। তাই এই নির্বাচনও একক একতরফা হবে। উপজেলা নির্বাচন নিয়ে জনগণ আতঙ্কে আছে।’
সংগঠনের সভাপতি মো. আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন ও শাহবাগ থানা কৃষক দলের সভাপতি এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।