১/১১’র কুশীলবরা এখনও অগণতান্ত্রিক সরকার কায়েমের করার স্বপ্ন দেখে: হাছান

তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনের পর আমরা ১১তম বর্ষ অতিক্রম করছি। কিন্তু এখনও ১/১১ এর কুশীলবরা সক্রিয়। তারা এখনও বাংলাদেশ অগণতান্ত্রিক সরকার কায়েমের করার স্বপ্ন দেখে। এবং মাঝে মধ্যে বিচ্ছিন্ন কথা বলে গণতান্ত্রিক সরকারের প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করে।’

মঙ্গলবার (১১ জুন) ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির নিয়মিত সভার শুরুতে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘১/১১ এর কুশীলবদের সাথে আজকে বিএনপিও হাত মিলিয়েছে অনেক ক্ষেত্রে। সেই কারণে ২০১৪ সালে নির্বাচন তারা বর্জন করে গণতন্ত্রে অভিযাত্রাকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেছিলো। এবং বিগত ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেও অংশ গ্রহণ করে নাই। তার উদ্দেশ্য ছিলো নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। তাই আজকে গণতন্ত্র মুক্তি পেলো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। গণতন্ত্রিক অভিযাত্রা অব্যাহত থাকলো। যেহেতু ১/১১ এর কুশীলবরা সক্রিয় সেই জন্য আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।  যাতে কেউ পিছন থেকে ছুরি মারতে না পারে।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮ সালের ১১ জুন, এদিন শুধু জননেত্রী শেখ হাসিনা মুক্তি লাভ করেননি, এ দিন গণতন্ত্র মুক্তি লাভ করেছিলো। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের আন্দোলন প্রেক্ষিতে বাধ্য হয়ে শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিয়েছিলো অগণতান্ত্রিক সরকার। আমাদের আন্দোলনের কারণে প্রকৃতপক্ষে বেগম খালেদা জিয়াও মুক্তি লাভ করেছিলেন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বেগম জিয়াও মুক্তি লাভ করেছেন। তখন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শুধুমাত্র শেখ হাসিনা মুক্তি জন্য লড়াই করেছেন তা নয়। সমস্ত রাজবন্দির মুক্তির জন্য লড়াই করেছেন। এমনকি যখন বিএনপির কোনও নেতানেত্রীর পুত্র-কন্যাকে অযৌক্তিক ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, তৎকালীন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বিরোধী দলের নেতা জননেত্রী শেখ হাসিনা কথা বলেছিলেন।’

আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ‘২০০৭ সালে যখন অগণতান্ত্রিক সরকার বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল করে। তখন প্রথমে ইতিপূর্বেকার সরকার প্রধান বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করে। যারা মনে করেছে ওই অগণতান্ত্রিক সরকারকে টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনাই প্রধান হুমকি সেজন্য তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে তাকে দেশে না আসতে বারণ করা হয়েছিলো। সমস্ত ঝুঁকি নিয়ে, মাথায় হুলিয়া নিয়ে তিনি বাংলাদেশ এসেছেন। গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘এই দিন শুধু জননেত্রী শেখ হাসিনা মুক্তি লাভ করেছিলেন তা নয়। ঐ দিন গণতন্ত্রের পায়ে যে শিকল পরানো হয়েছিল, গণতন্ত্র এই দিন মুক্তি লাভ করেছিলো। শেখ হাসিনা আর গণতন্ত্র সমার্থক হয়ে গেছে। ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনার স্বদেশে প্রত্যাবর্তন ছিলো, শুধু মাত্র জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশে প্রত্যাবর্তন নয়, সেদিন ছিলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এবং গণতন্ত্রের অগ্নি শিখার প্রত্যাবর্তন।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস। ২০০৮ সালের এই দিনে দীর্ঘ ১১ মাস কারাভোগ করার পর তিনি মুক্তি লাভ করেছিলেন।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এ মুখপাত্র বলেন, ‘বিএনপি মধ্যে যে অস্থিরতা সেটির বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে তাদের কর্মীরা তাদের অফিসে তালা মেরে দিয়েছে। যারা নিজের অফিসে নিজেরা তালা মারে, তারা কিভাবে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে, কিংবা সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর ঐক্য করবে এটি আমার জানা নেই। বিএনপি অফিসে তালা মারার মধ্যে দিয়ে এটিই প্রমাণ হয় বিএনপি প্রচণ্ড বিশৃঙ্খলা ও নেতৃত্বহীনতার মধ্যে দিয়ে চলছে।’

এসময়ে উপস্থিত ছিলেন উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার, প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব আশরাফ সিদ্দিকী বিটু প্রমুখ।