দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী অনেক মানুষকে আয়কর দিতে হলেও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে চাকরি করতে আসা ব্যক্তিদের আয় কর দিতে হচ্ছে না কেন?
জাতীয় সংসদে এমন প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন সংরক্ষিত নারী আসনে বিএনপির মনোনীত সাংসদ রুমিন ফারহানা। বুধবার বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন।
রুমিন বলেন: ১০ বছরের বেশি ক্ষমতায় থাকার পরও ৪ কোটি মধ্যম আয়ের নাগরিকের দেশে আয়কর প্রদানকারী নাগরিকের সংখ্যা মাত্র ২১ থেকে ২২ লাখ। এটা সরকারের ব্যর্থতা।
তিনি বলেন: গত বছরের মতো এবারও করমুক্ত আয়সীমা আড়াই লাখ টাকা রাখা হয়েছে। এর মানে, মাসে কারো আয় যদি ২০ হাজার ৮০০ টাকা হয় তাহলে তাকে আয় কর দিতে হবে। একটি পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি যদি একজন হয় আর পরিবারের সদস্য সংখ্যা যদি পাঁচ হয় তাহলে হিসাবে দেখা যায় দারিদ্রসীমার নিচে থাকা ব্যক্তিকেও করের আওতায় আনা হয়েছে।
এরপরই বিএনপির এই সাংসদ অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রাখেন। বলেন: আমাদের পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশের দুই লাখের মত বেতনভুক্ত কর্মী বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকা আয় করে নিয়ে যান। আমাদের এখানে এত বেকারত্ব থাকার পরও বিদেশ থেকে আমাদের লোক আনতে হয় কেন? এসব প্রশ্ন তো রাখা যায়। কিন্তু সবচেয়ে অবিশ্বাস্য বিষয় হলো প্রচুর পরিমাণ আয় করা বিদেশি কর্মীদের কর জালের মধ্যে আনার ব্যাপারে সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই!
তিনি আরও বলেন: এসব উচ্চ আয়ের কর্মীরা যদি ২০ শতাংশ হারে আয়কর দিতো তাহলে সরকার পেত ১৭ হাজার কোটি টাকা।
কর দেয়ার ক্ষেত্রে সাধারণ জনগণের নিরুৎসাহের কারণ হিসেবে এ সাংসদ বলেন: এক গবেষণায় দেখা গেছে, জনগণের করের টাকায় বেতনভুক্ত সরকারের যে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আছেন তাদের কাছ থেকে সেবা নিতে প্রতিবছর জনগণকে ঘুষ দিতে হচ্ছে ১১ হাজার কোটি টাকা। সুতরাং কর দেয়ার আগে মানুষ চিন্তা করে, যে সেবা বিনা পয়সায় পাওয়ার কথা তার জন্য টাকা ঘুষ দিতে হচ্ছে; তাহলে কর দেবো কেন?