বরগুনায় প্রকাশ্যে স্ত্রীর সামনে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা উল্লেখ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষক দলের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘দেশে একটি অস্বাভাবিক ও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি যাচ্ছে। লক্ষ্য করবেন এই দেশে আইনশৃঙ্খলা বলতে কিছু নাই। গত নির্বাচনের পর দেশে একটি বিশৃঙ্খলা পরিবেশ লক্ষ্য করছি।’
দুদু বলেন, ‘আপনারা বিশ্বজিৎ এর ঘটনা দেখেছেন। সম্প্রতি বরগুনায় স্ত্রীর সামনে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় সেখানে পুলিশ প্রশাসন ছিল কিন্তু তারা কিছুই করেনি। কিছুদিন আগে সেই ছেলে ফেসবুকে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি দেখে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন যে সে নৌকায় আস্থা রাখেনি, তারপরেই সে খুন হল। খুন হওয়ার পরে প্রশাসন থেকে বলছে- খুনিরা রেহাই পাবে না। বিশ্বজিতের খুনিরা পেয়েছে, রেহাই তো নাটোরে হত্যাকারীদের দিয়েছেন, বাবর হত্যাকারীদের আপনারা মুক্তি দিয়েছেন। এখন ফাঁসির আদেশ হলে প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ এ রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করে দেন।’
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লেবার পার্টির উদ্যোগ ‘বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে’ আয়োজিত সংহতি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলে।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘গত নির্বাচনের পর দেশে একটি বিশৃঙ্খলা পরিবেশ লক্ষ্য করছি। নির্বাচন সুষ্ঠু হয় নাই- এটা বিএনপি, ২০ দলীয় জোট, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বচন নয়। এটা সারা দেশবাসী দেখেছে, বিশ্ববাসী দেখেছে। ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ও আমেরিকার কংগ্রেস এই নির্বাচন যে গ্রহণযোগ্য নয় তা স্পষ্ট করে বলেছেন।’
বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনের পরে অনেকেই সরকারের পক্ষ থেকে বলেছিলেন বিরোধীদল নির্বাচনে আসলে এরকম একপাক্ষিক নির্বাচন হতো না। কিন্তু ২০১৮ সালের নির্বাচন দেশের জঘন্যতম নির্বাচন হয়েছে। শুধু তাই নয় এই নির্বাচন মুক্তিযুদ্ধ কেউ অপমানিত করেছে। ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মাকে অসম্মানিত করেছে। এই নির্বাচন বাংলাদেশকে কালো যুগের দিকে নিপতিত করেছে। এই নির্বাচন বাতিল করতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। রাজবন্দীদের মুক্তি দিতে হবে। ভালো নির্বাচন দিতে হবে। যে নির্বাচনে জনগণ তার ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। পুলিশ প্রশাসন, আমলারা আগের রাত্রে ভোট দিতে পারবে না। সেই রকম ভালো নির্বাচন দিতে হবে।’
এ সময় তিনি সবাইকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনকে বেগবান করি। এছাড়া মুক্তি পাওয়ার কোনও পথ নাই।’
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে এবং কৃষক দলের সদস্য কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সঞ্চালনায় সংহতি সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, ন্যাপ ভাসানীর সভাপতি অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, লেবার পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফারুক রহমান, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইন, কৃষক দলের সদস্য লায়ন মিয়া মো. আনোয়ার, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের মহাসচিব জাকির হোসেন, মহানগর বিএনপি নেতা ফরিদ উদ্দিন, আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, মাওলানা রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।