ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করলেও সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, ‘দেশে মহামারি আকারে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গু। ডেঙ্গু রোগীতে সয়লাব হাসপাতাল। তিল ধারণের জায়গা নেই। ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে। প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, যা আগের রেকর্ড ভেঙে দিচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাবে প্রতি তিন মিনিটে একজন করে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে।’
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এরইমধ্যে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে উল্লেখ তিনি বলেন, ‘হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন ও কন্ট্রোল রুমের সংকলন অনুযায়ী, জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে গতকাল পর্যন্ত ৭ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ২২ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্তের অনুমিত সংখ্যা ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৯৫০ জন।’
সরকারের ব্যর্থতায় রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বর ছড়িয়ে পড়েছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘গতকাল হাইকোর্ট বলেছেন, ডেঙ্গু মহামারি হতে বাকি নেই। ডেঙ্গুবাহী এডিস মশার কামড়ের ভয়ে সরকারের মন্ত্রী-সচিবরা অফিসে যাচ্ছেন না। ঢাকা সিটি করপোরেশনের উত্তর ও দক্ষিণের মেয়র নির্লজ্জের মতো বলে আসছেন, ‘কিছুই হয়নি, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’
পত্রিকার উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘মশা মারতে যে ঔষধ কেনা হয়েছে সেই ঔষধে কাজ হয় না। কারণ বাজেটের টাকা লুটপাট করে সস্তা দামে নকল ঔষধ কেনা হয়েছে। মহামান্য হাইকোর্টও বলেছেন, মশা নিধনে অকার্যকর ওষুধ আমদানি করা হয়েছে। জনরোষের ভয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, ঢাকার বাইরেও ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ছে, প্রাণহানি ঘটছে। যে ওষুধ আনা হয়েছে তা অকার্যকর।’
রিজভী বলেন, ‘ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় বসে ডাকাতদের ভূমিকা পালন করছে সরকার। জনগণ বাঁচলো না মরলো তা নিয়ে কোনো মাথা ব্যাথা নেই। একদিকে দেশে ডেঙ্গুর মহামারি অন্যদিকে ভয়াবহ বন্যার পানিতে ভাসছে মানুষ। ত্রাণ নেই, সাহায্য নেই, পানিবাহিত রোগের চিকিৎসা নেই। চারিদিকে শুধু হাহাকার ও দীর্ঘশ্বাস চলছে। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডনে ছুটি কাটাচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘গুম-খুন-ধর্ষণ-ক্রসফায়ার-গ্রেফতার-নিপীড়নের সাথে সাথে এডিস মশার বিস্তার ঘটিয়ে মানুষ হত্যা করছে সরকার। ঘরে ঘরে মশার আতঙ্ক সৃষ্টি করে রেখেছে। গণতন্ত্রহীণতার কারণেই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে অসহায় মানুষকে সহায়তার দায়-দায়িত্ব থাকে না। বর্তমান সরকার বন্যা ও ডেঙ্গু জ্বরের মতো এই বিপর্যয়ে ভ্রুক্ষেপহীন ও উদাসীন থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ তাদের স্বাচ্ছন্দ্যে তো কোনো বিঘ্ন ঘটছে না।’