সিলেটের রেজিস্ট্রি মাঠে বিভাগীয় সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। ফলে আজ মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ২টায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে মহাসমাবেশ। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে এ মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার আজ মঙ্গলবার সকালে সমাবেশের অনুমতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরকে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (এসএমপি) গোলাম কিবরিয়া সমাবেশের অনুমতির বিষয়টি জানিয়েছেন বলে দিদার জানান।
এরই মধ্যে সমাবেশ সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে। মহাসমাবেশে যোগ দেওয়ার কথা দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের। সমাবেশের জন্য পুলিশের কাছে আবেদন করলেও এ ব্যাপারে গতকাল সোমবার বিকেল পর্যন্ত কোনো সাড়া পায়নি স্থানীয় বিএনপি। তবে সমাবেশ করা যাবে না-এমন নিষেধাজ্ঞাও ছিল না।
সমাবেশের দুই দিন আগে থেকেই দলের নেতাকর্মীদের পুলিশ ধরপাকড় শুরু করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত রবিবার জেলার তিন উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ১৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বিএনপি দাবি করছে, সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতেই এ ধরপাকড় শুরু হয়েছে।
আজ বেলা ২টায় সিলেট নগরের রেজিস্ট্রারি মাঠে বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। দুর্নীতির মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এ মহাসমাবেশ ডাকা হলেও মূলত সিলেটে দলকে চাঙ্গা করতেই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ ছাড়া স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান ও ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে নেই সিলেটে বিএনপি। প্রকাশ্যে কোনো সভা-সমাবেশও করতে পারেনি দলটি। সভা-সমাবেশ সব কিছুই করতে হয় কমিউনিটি সেন্টারে। এ ছাড়া চরম নেতৃত্ব সংকটে ভুগছে দলটি। জেলা ও মহানগর দুই কমিটিরই মেয়াদ পেরিয়ে গেছে এক বছর আগে। দলের হাইকমান্ড থেকে যেকোনো সময় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার কথা বলা হলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় কমিটি ঘোষণাও হচ্ছে না। এ নিয়ে তৃণমূলে চরম হতাশা বিরাজ করছে।
দলের এই অবস্থায় বিভাগীয় মহাসমাবেশ সফল করতে কয়েক দিন ধরেই বিভাগজুড়ে ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছে বিএনপি। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কর্মিসভা করা, লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগের মাধ্যমে সমাবেশে বড় ধরনের শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে না থাকা দলটি। তবে মহাসমাবেশ আয়োজনের ব্যাপারে পুলিশ এখনো অনুমতি দেয়নি বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা।
সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ বলেন, বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ সামনে রেখে বিভিন্ন উপজেলায় গণগ্রেপ্তার শুরু করেছে পুলিশ। জেলার জকিগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ উপজেলায় বিএনপির সাধারণ সম্পাদকসহ ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে।
তবে সমাবেশ ঘিরে হয়রানি ও ধরপাকড়ের অভিযোগ অস্বীকার করে সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) আমিনুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। তিনি বলেন, নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে কয়েকজন বিএনপি নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। আটকরা বিভিন্ন মামলার আসামি বলেও জানায় পুলিশ।