যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাটকে গ্রেপ্তারের গুঞ্জনের বিষয়ে কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আজ শনিবার হোটেল সোনারগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন।
চীনের প্রজাতন্ত্রের ৭০ বছরের অর্জন নিয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় সাংবাদিকরা জানতে চান ‘সকাল থেকে সম্রাটকে আটকের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তিনি আটক কি-না?’ জবাবে তিনি বলেন, ‘অপেক্ষা করুন, যা ঘটে দেখবেন।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেখবেন আপনারা খুব শিগগিরই দেখবেন। আপনারা অনেক কিছু বলছেন, আমরা যেটা বলছি ‘সম্রাট’ হোক যে-ই হোক অপরাধ করলে তাকে আমরা আইনের আওতায় আনব। আমি এটা এখনও বলছি, সম্রাট বলে নয়, যে কেউ আইনের আওতায় আসবে। আপনারা সময় হলেই দেখবেন।’
যে-ই অপরাধ করুক তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আমরা তথ্য ভিত্তিক অভিযান চালাচ্ছি। আপনারাও দেখছেন। অপরাধ ঘটছে বা যারা অপরাধ ঘটাচ্ছে এমন খবর যখনই পাবো তখনই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো। এটা কোনো শুদ্ধি অভিযান না। এটা সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যা করার প্রয়োজন তাই আমরা করছি।’
এই অভিযান পরিচালনার মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে কিনা- এমন প্রশ্নে মন্ত্রী জানান, ‘ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে পুলিশ নয়, র্যাব অভিযান শুরু করেছে। আর এতে র্যাবই সফল। এটা আমি ক্লিয়ার করে দিতে চাই, যেহেতু অভিযানটি র্যাব শুরু করেছে। অভিযানের আওতায় সাধারণ কাউকে যেন অযথা হ্যারাজ করা না হয় সেজন্য এই পরিকল্পনা।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আপনাদের আমরা সব সময় সঠিক তথ্যই দিয়ে থাকি। চলমান যে অভিযান এটাকে আমি অভিযান বলব না, এটা সবসময় হয়ে থাকে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে এগিয়ে গেছে তার মূল কারণ হলো, সামনে কি আসবে সেটা নিয়ে চিন্তা করেন। এ কারণে তিনি দেশকে একটা পর্যায় নিয়ে গেছেন। সেটা কিভাবে টেকসই উন্নয়নে রুপান্তরিত করা যায় সে জন্য প্রধানমন্ত্রী সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তিনি সবাইকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে বলেছেন এবং সবাইকে আইন মেনে চলতে বলেছেন।’
উল্লেখ্য, চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে সবচেয়ে আলোচনায় আসা ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে আটক করা হয়েছে এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা নগরীর অবৈধ ক্যাসিনো তথা জুয়ার আসরের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পেয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেপ্তাররাও তাকে ‘ক্যাসিনো সম্রাট’ বলেও অভিহিত করেছেন।
এসব কারণে সম্রাটের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল পুলিশ। গত রোববার তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা-সংক্রান্ত একটি আদেশ দেশের সব বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে পাঠানো হয়। সেইসঙ্গে তার ব্যাংক হিসাবও তলব করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
চলমান ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান শুরুর পর থেকেই কাকরাইলের ভূঁইয়া ম্যানশনে তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে শতাধিক যুবকের পাহারায় অবস্থান করেন সম্রাট। প্রায় সপ্তাহ খানেক সেখানে অবস্থান করেন তিনি। তারপর থেকেই লাপাত্তা হন সম্রাট।