প্যারোল নয়, রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়েই দেশনেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আসবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ।
তিনি বলেছেন, ‘এই সরকার যত দ্রুত ক্ষমতা থেকে বিদায় নেবে দেশের জন্য তত মঙ্গল। সেজন্য আমরা দাবি করবো- অবিলম্বে এই সরকারের পদত্যাগ করা উচিত এবং একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠনের সুযোগ সৃষ্টি করা উচিত।’
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে ২০ দলীয় জোট আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মওদুদ বলেন, ‘দেশে আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা এবং দেশের মানুষ যাতে সভ্যতার সহিত বসবাস করতে পারে সেই সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘আজকে বেগম জিয়ার মুক্তি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি না। সুতরাং এর অবসান একমাত্র হতে পারে রাজপথে, রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম জিয়ার মুক্তি হবে। প্যারোলের মাধ্যমে নয়। সেই মুক্তি আমাদের আনতে হবে। এটা সময়ের ব্যাপার।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মওদুদ বলেন, ‘আপনারা যদি মনে করেন- আর কতদিন, এতদিন তো আমরা সহ্য করেছি। কিন্তু আমি বলবো- আমাদের আরও কিছুদিন সহ্য করতে হবে। সময় আসবে, যখন এদেশে একটি জালেম সরকারকে উৎখাত করার জন্য একটি জনবিস্ফোরণ ঘটবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০ দলীয় ঐক্যজোট আছে এবং থাকবে। পাশাপাশি সর্ববৃহৎ প্ল্যাটফর্ম তৈরির জন্য আমাদেরকে দেশের সকল গণতন্ত্র ও মুক্তিকামী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলনের মাধ্যমে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে।’
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘এই সরকার জবাবদিহিতাহীন সরকার বলেই যা হওয়ার দেশে এখন তাই হচ্ছে। জবাবদিহিতা না থাকার কারণেই আজকে এই নৈরাজ্য টেন্ডারবাজির দুর্নীতি চলছে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ-যুবলীগের ‘সোনার ছেলেদের’ গত ১০ বছর ধরে নৈরাজ্যে দেশের মানুষ জর্জরিত। প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে পাচার হচ্ছে। ব্যাংক লুট, শেয়ারবাজার লুট, দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে এক শ্রেণির মানুষ এই সরকারের মদদে এবং যারা এই সরকার পরিচালনা করছে তাদের প্রভাবে ও তাদের প্রত্যক্ষ অংশীদারিত্বে এই ধরনের দুর্নীতি চলছে দেশে।’
মওদুদ আরও বলেন, ‘আজকে আমাদের সময় হয়েছে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার। আজকে আবরার ফাহাদ শহীদ হয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তিনি প্রমাণ করে দিয়ে গেছেন বাংলাদেশে যদি ভিন্ন মতাবলম্বন করা হয় তবে তাকে হত্যা পর্যন্ত করতে কার্পণ্য করে না বর্তমান সরকার।’
তিনি বলেন, ‘পত্রপত্রিকার মাধ্যমে দেশের মানুষ জানতে পেরেছে শুধু বুয়েট নয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের হল এবং ডরমেটরিগুলোতে ক্ষমতাসীন দলের আশীর্বাদপুষ্ট লোকজন টর্চার সেল তৈরি করেছে। তারা শুধু ভিন্ন মতাবলম্বীদের সেখানে নির্যাতন করে না, নিরীহ ছাত্রদেরও নির্যাতন করে এবং সেখান থেকে চাঁদা আদায় করে।’
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- দলের ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, জাতীয় পার্টির মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান রেজা, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির অধ্যাপক গোলাম পরোয়ার, কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবদুল হালিম ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা