খুব শিগগিরই বাংলাদেশি কর্মীরা যৌক্তিক আর্থিক ব্যয়ে মালয়েশিয়া যেতে পারবেন বলে জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ। গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে ৩০০ বিধিতে বিবৃতি দেওয়ার সময় মন্ত্রী এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘এক শ্রেণির ভেন্ডরদের অসযোগিতার কারণে অনেকে মালয়েশিয়া সরকার কর্তৃক দেওয়া সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। খুব শিগগিরই বাংলাদেশের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলে যাবে। বাংলাদেশি কর্মীরা যৌক্তিক আর্থিক ব্যয়ে যেতে পারবেন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। বিশেষ করে এই বিষয়ে সামাজিক মাধ্যম ও গণমাধ্যমে প্রচারিত কিছু মনগড়া ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য এই বিভ্রান্তি আরও বাড়াচ্ছে বলে প্রতিয়মান হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রকৃত তথ্য উপস্থাপন করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত ও বিভ্রান্তি দুর করার লক্ষ্যে বিষয়টি নিয়ে বলতে হচ্ছে।’
ইমরান আহমদ বলেন, ‘২০১৬ সালে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে সমঝোতা স্মারকের ভিত্তিতে জি টু জি প্লাস প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণ করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ২০১৮ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ ৯০ হাজার কর্মী মালয়েশিয়া কর্তৃক নির্বাচিত ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে উক্ত দেশে গমন করে। অনলাইন পদ্ধতিতে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া তরান্বিত করা হয়। এ প্রক্রিয়া সিন্ডিকেশন ও উচ্চ অভিবাসন ব্যয়ের অভিযোগে মালয়েশিয়ার নতুন সরকার ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ থেকে এই পদ্ধতি স্থগিত ঘোষণা করেন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে সরকার স্থগিত শ্রমবাজারটি চালুর জন্য বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করে। এ বিষয়ে জন ওয়ার্কিং গ্রুপের তিনটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে একাধিকার মালয়েশিয়ার শ্রম অভিবাসন বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় মিলিত হই। এ বিষয়ে সব শেষ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকটি হয়েছে গত ৬ নভেম্বর। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ এবং সরকারি জোটের আনোয়ার ইব্রাহিমের সাথেও সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হই। এইসব বৈঠকগুলোতে যোগ্য এজেন্সির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে অভিবাসন ব্যয় কমানোসহ নৈতিক অভিবাসন নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়।’
সরকারের এ মন্ত্রী বলেন, ‘আমি নির্দিধায় বলতে চাই। আমরা তথাকথিত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ মালয়েশিয়া পক্ষের সাথে বিভিন্ন আলোচনায় উভয় পক্ষ যেকোনো অনৈতিক সিন্ডিকেশনের বিপক্ষে সুস্পষ্টের কথা জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতি বিরোধী অবস্থানের চেতনায় অনৈতিকতা দুর্নীতি বিরোধী জিরো টলারেন্স নীতিকে অনুসরণ করতে আমি এবং আমার মন্ত্রণালয় বধ্য পরিকর। কোনো সংসদ সদস্য বস্তুনিষ্ট তথ্য থাকলে আমাদের জানাতে পারেন। আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করব।’
সংসদে সরকারের এ মন্ত্রী আরও বলেন, ‘কোনো দায়িত্বশীল মানুষ যেন গুজব বা ধারণা নির্ভর তথ্য বা মন্তব্য দিয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর মতো দায়িত্ব হীনতার পরিচয় না দেন। কারণ এতে বিদেশে ভুল বার্তা যায়, দেশের শ্রমবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দেশের ভাবমুর্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। দিন শেষে লাভবান হয় স্বার্থান্বেষীরা আর ক্ষতিগ্রস্ত হয়