বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘সরকারের করোনা প্রতিরোধে সরকারের কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেই। মজার বিষয় হচ্ছে, তাদের দীর্ঘদিনের যে প্রচেষ্টা অর্থাৎ বিরোধী মতকে দমন করা এবং বিরোধী কণ্ঠকে দমন করা দেশের এই পরিস্থিতিতেও তারা এর মধ্যেই নিয়োজিত আছে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে বিরোধীদের মধ্যে সবচেয়ে উচ্চকণ্ঠে যিনি থাকবেন (খালেদা জিয়া) তাঁকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। আমরা আজকে শুনেছি যে, তার বাম দাঁতের ব্যথা ডান দিকে চলে গেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, তিনি কোনও স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছেন না। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। তিনি ইনসুলেন্স নিচ্ছেন, সবকিছু নিচ্ছেন।’
সোমবার (১৬ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণের পূর্বে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘ব্যাপকভাবে মানুষকে সচেতন করার জন্য বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল (বিএনপি) একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে শুরু থেকেই করোনা ভাইরাস সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার এ কাজটি শুরু করেছে। আজকে আমরা আমাদের এই সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে এই প্রচারপত্র বিলি করবো।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি ঘনবসতির দেশ। বাংলাদেশের মেডিকেল ফ্যাসিলিটিস অত্যন্ত অনুন্নত এবং দুর্নীতিতে ভরা। আপনারা জানেন, মেডিকেলের একটি বই ছাপানোর জন্য খরচ দেখানো হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এই ভয়ঙ্কর স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতিমূলক পরিবেশের মধ্যে করোনার মত একটি পৃথিবীব্যাপী মহামারি প্রতিরোধে আমরা সরকারের সেরকম কোনও উদ্যোগ দেখছি না।’
শিক্ষামন্ত্রীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, আগে সংক্রমণ হোক তারপরে স্কুল বন্ধের কথা চিন্তা করবো। গণবিরোধী সরকারের মন্ত্রী ছাড়া এ কথা বলা সম্ভব নয়।
শিক্ষামন্ত্রীর এই কথা এক প্রকার ভানুর সেই কৌতুকের মত- ‘আগের চইলা যাবার ক তারপর তো আমি আছিই’। অর্থাৎ বাচ্চারা আক্রান্ত হয় কতটা অসুস্থ হয়েছেন সেটা আগে শিক্ষামন্ত্রী দেখবেন, তারপর তিনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’
রিজভী বলেন, ‘এখন স্কুল-কলেজগুলো বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই সরকারের সেদিকে কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। আপনারা যারা বিদেশ থেকে এসেছেন আমাদের দেশের মানুষরা তাদের আলাদাভাবে রাখার যে কোয়ারেনটাইন ব্যবস্থা সেটা ভয়ঙ্কর বিপর্যস্তমূলক ব্যবস্থা। হাজী ক্যাম্পের মধ্যে ভালো কোনও সেনিটারি ব্যবস্থাও নেই।’
কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম নিগ্রহের বিষয়ে রিজভী বলেন, ‘আপনারা আপনাদের স্বার্থে আঘাত লাগলে রাতেরবেলা একটি নিরীহ নিরস্ত্র সাংবাদিককে তুলে এনে নির্যাতন করে জেলে পুরে দেবেন। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
এসময় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, কৃষক দলের সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, ঢাকা মহানগরীর আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নাসির হায়দার, কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নাসির হাজারী, আলিম হোসেন, লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, কৃষিবিদ মেহেদি হাসান পলাশ, এম জাহাঙ্গীর আলম, আব্দুর রাজি, হারুন শিকদার, টাঙ্গাইল জেলা কৃষকদলের সভাপতি দিপু হায়দার খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।