সরকারি ত্রাণ নিয়ে যখন দেশজুড়ে কেলেঙ্কারির খবর আসছে, তখন অনেকটাই ব্যতিক্রম পথে হাটছেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের ঢাকার সংসদ সদস্য শবনম জাহান শীলা।ঢাকা মহানগর উত্তর মহিলা আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক শবনম জাহান এমপি নিজস্ব অর্থায়নে ত্রাণ সহায়তা দিয়ে দাড়িয়েছেন হতদরিদ্র অসহায় মানুষদের পাশে।সরকারিভাবে যেটুকু বরাদ্দ পেয়েছেন তাও করোনার মহাদুর্যোগে বিপদে পড়া মানুষদের মধ্যে বিতরণ করেছেন বলেও জানান শবনম জাহান।
ত্রাণ বিতরণের ধারাবাহিক কর্মসূচীতে মঙ্গলবার রাজধানীর ভাষাণটেক এলাকায় ছয়শ পরিবারকে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন তিনি।ত্রাণের প্যাকেটে চাল-ডাল, তেলসহ রয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, যা দিয়ে একটি পরিবারের এক সপ্তাহ চলবে বলে জানান ত্রাণ পাওয়া মানুষরা। ভাষাণটেক স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে এই ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। সপ্তাহ খানেক আগে সরকারি বরাদ্দ থেকে এই মাঠেই প্রায় ৩শ’ পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দেন সংরক্ষিত আসনের এই সাংসদ।
শবনম জাহান এমপি বলেন, সরকারি ত্রাণের বাইরে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে তিনি এখন পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার পরিবারকে সহায়তা দিয়েছেন।“গুলশান, বনানী,বাড্ডা, ক্ষিলখেতসহ বিভিন্ন জায়গায় আমার সংগঠন ও নিজের উদ্যোগে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছি।ত্রাণের পাশাপাশি নগদ অর্থ দিয়েও সহায়তা করছি” বলেন শবনম।
তিনি বলেন, করোনায় স্থবির হয়ে পড়েছে গোটা বিশ্ব, আক্রান্ত বাংলাদেশেও থমকে গেছে জীবন-জীবীকার চাকা। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন লাখ লাখ মানুষ।বিশেষ করে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের অবস্থা শোচনীয়।হতদরিদ্রদের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে করোনায় দরিদ্র হয়ে পড়া মানু্ষও।সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।বলেন, সবার সহযোগিতা ছাড়া এই মহাদুর্যোগ থেকে সরকার একা মানুষকে পরিত্রাণ দিতে পারবে না।শবনম জাহান জানান, সাধারণ ছুটি শুরু হওয়ার পর থেকেই কার্যত কর্মহীন হয়ে পড়েন দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ। তখন থেকেই তাদের পাশে দাড়াতে ত্রাণ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
বিভিন্ন জায়গায় জনপ্রতিনিধিদের ত্রাণ আত্মসাতের ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, যারা ত্রাণ আত্মসাৎ করেছে তারা দলের লোক হলেও শাস্তি দিতে হবে।“আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যেই বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন।কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না” বলেন শবনম জাহান।জনপ্রতিনিদের বাদ দিয়ে আমলাদের দিয়ে সরকারের ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এর ফলে সুষ্ঠুভাবে ত্রাণ বিতরণ সম্ভব হবে। কারণ জনপ্রতিনিধিরা যেখানেই যান, সেখানেই কর্মী-সমর্থকসহ ব্যাপক জনসমাগম হয়ে যায়।আর এখন সময়টা ভিন্ন।বলেন “আমাদের সামাজিক দূরত্ব মানতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, অন্যথায় এই ত্রাণের সাথে করোনাভাইরাসও ছড়িয়ে যাবে”।
মানুষের জীবন-জীবিকা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তাঁর এই সাহায্য কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি। আর যারা ব্যক্তিগত উদ্যোগে মানুষের পাশে দাড়াচ্ছেন তাদেরকেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান শবনম জাহান।