বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কঠোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপির নেতারা প্রশংসা করার সংস্কৃতিটা লালন করে না, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি রিজভী আহমেদের বক্তব্য গতকাল দেখেছি। তিনি যেভাবে বক্তব্য রাখছেন, এগুলো আমার কাছে উদভ্রান্তের প্রলাপের মতো মনে হয়।’
রবিবার ( ৩ মে) বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে সচিবালয়ে নিজ দফতর থেকে দেয়া এক বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. হাছান বলেন, ‘এই মহাদুর্যোগের সময় আসলে রিজভী আহমেদসহ বিএনপি নেতারা ফটোসেশন এবং বিষোদগার এবং মিথ্যাচারের রাজনীতি নিয়েই ব্যস্ত। রিজভী আহমেদ অসুস্থ ছিলেন, তিনি আরোগ্য লাভ করেছেন, এজন্য আল্লাহ’র কাছে আমি শুকরিয়া আদায় করছি যে, তিনি দ্রুত আরোগ্য লাভ করেছেন।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেতারা যাই বলুক না কেন, আজকে এই বিশ্ব করোনো পরিস্থিতিতে এই মহাদুর্যোগের সময়, এই মহামারীর সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেভাবে এই দুর্যোগ মোকাবিলা করছেন, সেটি আজকে বিশ্বসম্প্রদায় কর্তৃক প্রশংসিত হয়েছে, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম, ফোর্বস ম্যাগাজিন এমনকি ওয়ার্ল্ড হেল্থ অর্গানাইজেশন তাঁর এই নেতৃত্বের প্রশংসা করেছে।’
গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রকে এগিয়ে নেয়া এবং বহুমাত্রিক সমাজ বিনির্মাণে মুক্ত, স্বাধীন এবং দায়িত্বশীল গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যেমন প্রয়োজন একইসাথে আমাদের সম্মিলিত দায়িত্বশীলতাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে সকল সাংবাদিক এবং গণমাধ্যমের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘বাংলাদেশে সাংবাদিকরা এবং গণমাধ্যমের সাথে যারা যুক্ত আছেন তারা, এই বৈশ্বিক দুর্যোগ করোনো পরিস্থিতির মধ্যে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। ইতোমধ্যেই আমাদের একজন সাংবাদিক বন্ধু হুমায়ুন কবীর খোকন দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি তার বিদেহী আত্মার শান্তিকামনা করছি। একইসাথে অনেক সাংবাদিক বন্ধু যারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তারা যাতে দ্রুত আরোগ্য লাভ করেন, মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে সেই প্রার্থনা করছি।’
তথ্যমন্ত্রী এসময় পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন, ‘আমাদের সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও অবাধ এবং মুক্ত গণমাধ্যমে বিশ্বাস করে। সেই কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছে। ২০০৯ সালে দৈনিক পত্রিকার সংখ্যা ছিল ৪৪৫টি, ২০২০ সালে এখন দৈনিক পত্রিকার সংখ্যা ১২৯৪টি। ২০০৯ সালে সাপ্তাহিক পত্রিকার সংখ্যা ছিল ২০৮টি, এখন সেটি ১২০৮টি।’
ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের খতিয়ান দিয়ে ড. হাছান মাহমুদ জানান, ‘রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ২০০৯ সালে ছিল ২টি, এখন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ৪টি। বেসরকারি টেলিভিশন ২০০৯ সালের শুরুতে ১০টি আর এখন ৪৫টি বেসরকারি টেলিভিশনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এফএম বেতার ২০০৯ সালে একটিও ছিল না, এখন ২৪টি এফএম বেতার কেন্দ্রের অনুমোদন দেয়া হয়েছে, যার মধ্যে বেশির ভাগ সম্প্রচারে আছে। কমিউনিটি রেডিও ২০০৯ সালে একটিও ছিল না, এখন ৩২টি কমিউনিটি রেডিও অনুমোদন দেয়া আছে, তারমধ্যে অনেকগুলো সম্প্রচারে আছে।’
‘এই পরিসংখ্যানেই বলে যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকার গণমাধ্যমের অবাধ বিস্তৃতি এবং স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে এবং সেই কারণেই গত ১১ বছরে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছে’ বলেন তিনি।