জাতির জনক সকল দলের, সকল মানুষেরঃগোলাম মোহাম্মদ কাদের

গোলাম মোহাম্মদ কাদের

জাতীয় পার্টি চেয়াম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, জাতির জনক কোন দল বা গোষ্ঠির হতে পারেনা। জাতির জনক সকল দলের, সকল মানুষের। তিনি বলেন, আজকে যারা রাজনীতি করছে, সকলের উচিত জাতির জনককে মেনে নিয়ে রাজনীতি করা। তাঁর অবদানকে স্বীকার করেই রাজনীতি করতে হবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী। বঙ্গবন্ধুর ডাকে এদেশের সকল মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। দেশ ও মানুষের কল্যাণে বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ অপরিসীম। বঙ্গবন্ধু আন্দোলন সংগ্রামের রোল মডেল, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সকল প্রেরণার উৎস।

তাঁর জীবনী অনুসরণ করলে সকল সমস্যার সমাধান পাওয়া সম্ভব। তিনি সকল অন্যায় ও অনিয়মের প্রতিবাদ করে গণমানুষের আস্থা ও ভালোবাসার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। তাই শক্তিশালী ও নির্যাতনকারী পাকিস্তানী সরকারের নির্দেশনা অমান্য করেও দেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ মেনে চলেছেন। বলেন, বঙ্গবন্ধু প্রতিপক্ষেকে রাজনৈকিভাবে মোকাবেলা করেছেন কিন্তু কখনো শত্রতা করেননি।

প্রতিপক্ষের বিপদেও পাশে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু উদারতার অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি বলেন, পল্লীবন্ধু জাতীয় সংসদের বক্তৃতায় বলেছিলেন, জাতীয় পার্টি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতার মর্যাদা দিতে চেয়েছিলেন। অপ্রত্যাশিত কিছু কারণে তা করতে পারেননি। কিন্তু জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টি ভোট দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে জাতির জনকের মর্যাদা দিয়েছে।

আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান-এর বনানী অফিস মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

এসময় জাতিয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, বর্তমানে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ কমছেনা। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সমন্বয়ের অভাবে এখন করোনা চিকিৎসা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সংক্রমণ কমছেনা কিন্তু  কোভিড হাসপাতালগুলোকে নন কোভিড করা হচ্ছে। কোন কোন হাসপাতাল থেকে করোনা রোগীদের বের করে দেয়া হচ্ছে। করোনা রোগীরা অক্সিজেন কিনে বাড়িতে চকিৎসা নিচ্ছে, এটা আমাদের জন্য দূর্ভাগ্যজনক।

তিনি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দূর্নীতি বন্ধ এবং দূর্নীতিবাজদের বিচারের মুখোমুখি করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, দেশে এখনো বন্যা এবং করোনা সংক্রমণ চলছে। তাই জাতীয় পার্টির সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের করোনা আক্রান্ত এবং বন্যার্তদের সহায়তা করতে নির্দেশ দেন।

এসময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, জাতীয় পার্টি প্রেসিডিয়াম সদস্য আজম খানের মালিকাধীন নারগানা ইন্টারন্যাশনাল রিসোর্ট-এ সন্ত্রাসী হামলা এবং লুটপাটের ঘটনায় যারা জড়িত

তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এসময় নারগানা ইন্টারন্যাশনালে হামলা এবং লুটপাটের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।

এসময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, জাতির জনকের প্রশ্নে কোন বিতর্ক নেই। শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে কিংবদন্তী নেতা হয়েছেন। দেশ ও দেশের মানুষের জন্য নিবেদিত থেকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট স্বপরিবারে শাহাদত বরণ করেছেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু পৃথিবীর ইতিহাসে অনন্য নেতা।

সারাদেশে অনেক নেতার জন্ম হয়েছে কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাঁশের লাঠি নিয়ে ট্যাংকের সামনে দাঁড়িয়েছে বাঙালীরা। এটা নজির বিহীন নেতৃত্বের প্রমাণ। জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সকল দলের অংশগ্রহণে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলুন। বলেন, আমরা সহায়তা করতে রাজি আছি।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে জাতীয় পার্টি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক গগণে শুণ্যতা বিরাজ করছে। গেলো ৩০ বছরে দেশের মানুষ অনেক রাজনৈতিক দলের রাজনীতি দেখেছে। দেশের মানুষ বিশাস করে দেশের রাজনৈতিক শুন্যতা পূরণে জাতীয় পার্টির বিকল্প নেই। তাই দলকে আরো শক্তিশালী করতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহবান জানান জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবুল হোসেন বাবলা এমপি, মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, সাবেক মহাসচিব ও বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ মোঃ মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, আজম খান, শামীম হায়দার পাটোয়ারী,রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আব্দুস সাত্তার মিয়া, আলমগীর সিকদার লোটন।

সভা পরিচালনা করেন- জাতীয় পার্টির যুগ্ম দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম। উপস্থিত ছিলেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু, নাজমা আখতার এমপি, উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য এ্যাড. নুরুল আজহার শামীম, শাহ-ই আজম, পনির আহমেদ এমপি, মোঃ নুরুল ইসলাম তালুকদার, ভাইসচেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান এমপি, সুলতান আহমেদ সেলিম, শফিউল্লাহ শফি, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, ইয়াহ্ হিয়া চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব ইকবাল হোসেন তাপস,  আবু তৈয়ব, এস.এম. আল জুবায়ের, সমরেশন মন্ডল মানিক, শাহজাহান কবীর, শহীদ হোসেন সেন্টু, ডাঃ মোঃ আব্দুল্লাহ আল ফাত্তাহ, এস.এম. পারভেজ রহমান, ছাত্রসমাজের সম্পাদক আল মামুন।