সাংবাদিকতায় বিএনপি-জামায়াতের লোকজন : গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী

সাংবাদিকতায় বিএনপি-জামায়াতের লোকজন ঢুকে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। খিচুরি রান্না শিখতে কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরের প্রস্তাব নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে ডাকা প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বেশ কিছুদিন আগে মিড ডে মিল নীতিটা পাস হয়েছে। এটি প্রাথমিক পর্যায়ে আছে, ডিপিপি প্রণয়নের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে নিউজটি খিচুরি রান্না শিখতে কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর একদিকে মন্ত্রণালয় এবং অন্যদিকে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের মতো মনে হয়।’

তিনি বলেন, ‘গতকাল দেখি সামান্য ধারণা নিয়ে বিএনপির রিজভী আহমেদ নানা ধরনের কথা বলছেন। তারা দেখেননি, পড়েননি কিছু। ২০০৫ সাল থেকে শুরু করে তাদের কোনো ইতিহাস নেই, জিয়াউর রহমানের নেই, খালেদা জিয়ার নেই, কেউ শিক্ষা নিয়ে কথা বলেননি।’

সাংবাদিকদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা আপনারা মাইন্ড করবেন না। বিএনপি-জামায়াতের লোকজন সাংবাদিকতা পেশা নিয়ে এখানে আসছে। তাদের কোনো জ্ঞান-গরিমা নেই। হুট করে একটা লিখে দিলেই মনে হয় হয়ে গেল! সরকারের ভাবমূর্তি কোথায় গেল না গেল না গেল এরা তা দেখে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এলাকায় দেখেছি সব বিএনপির, ছাত্রদলের, যুবদলের ছেলেরা এখন সাংবাদিকতা করে, ভ্রান্ত রিপোর্ট করে। এদিকে থেকে আপনারা একটু নজর রাখবেন। সরকারের যেন বদনাম না হয়।’

জাকিন হোসেন বলেন, তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের জন্য মানুষের কল্যাণে দিনরাত হাড়ভাঙা পরিশ্রম করছেন। আমাদের সন্বন্ধে নানা ধরনের কথা বলে মানুষকে নানাভাবে উসকে দিচ্ছে বিএনপি। এটা থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে, আর মানুষকে জানাতে হবে শেখ হাসিনা সরকার কখনও জনকল্যাণ ব্যতীত কোনো কাজ করে না।’

প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে দুপুরের খাবার দেয়ার উদ্যোগটি শিশুদের ভালোর জন্যই নেয়া হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এজন্য এবার যে প্রস্তাবনা দিয়েছি, এটি ১৯ হাজার ২৮২ কোটি টাকার প্রস্তাব। মিড ডে মিল কার্যক্রমটি আমরা ১৬ উপজেলায় পাইলটিং (পরীক্ষামূলকভাবে চালু) করেছি। আমরা বাচ্চাদের খিচুড়ি খাওয়াব। তিন দিন বিস্কুট খাওয়াব, তিন দিন রান্না করা খাবার খাওয়াব। ডিম, কলা ইত্যাদি ইত্যাদি আমরা চিন্তাভাবনা করছি, যাতে বাচ্চাদের কিছুটা হলেও পুষ্টি দিতে পারি। সুন্দর স্বাস্থ্যবান শিশু না হলে পড়াশোনায়ও মনোযোগ দিতে পারে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকে ইংরেজির জন্য ব্রিটিশ কাউন্সিলকে দিয়ে আমাদের ছেলেমেয়েদের পড়ানোর চেষ্টা করছি। গণিত অলিম্পিয়াডের মাধ্যমে আমরা অংক শেখার ব্যবস্থা করছি। প্রশিক্ষণ প্রতিটি মানুষের জন্য প্রয়োজন আছে। প্রত্যেকেরই সিনিয়রদের কাছে কিছু শেখার আছে। সে কারণে এই বিষয়ে কিছু টাকা ধরা আছে। এটি বিশাল কোনো ক্ষতিকর ব্যবস্থা নয়। এটি একটি প্রস্তাব, এটি দেখার আরও উচ্চতর জায়গা আছে। প্ল্যানিং কমিশন দেখবে। এটা নিয়ে হৈ চৈ করার মতো কোনো অবস্থা নেই।’

ডব্লিউএফপি কেরালা, চেন্নাই ও দিল্লিতে বিদ্যালয়ের শিশুদের খাবার দেয়ার বিষয়টি দেখানোর জন্য তাকে নিয়ে গিয়েছিলেন জানিয়ে জাকির হোসেন বলেন, ‘১৯৪১ সালে কেরালায় স্কুলে মিড ডে মিল চালু করা হয়েছে। আমি সেখানে দেখে এসে পাইলটিং করেছি। আমি যদি উকিল হই আমি কি সিনিয়রের কাছে শিখব না?’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যারা এই কর্ম (মিড ডে মিল) পরিচালনা করবে, যেখানে দীর্ঘদিন থেকে এটা মিড ডে মিল দেয়া হচ্ছে সেখানে কিছু শিক্ষা দেয়ার জন্য। এটা কোনো খিচুড়ি পাক শিক্ষা নয়। এটা ম্যানেজমেন্টটা জানার জন্য, শেখার জন্য, কীভাবে করছে। এজন্য সামান্য কিছু টাকা ডিপিপিতে ধরা আছে।’

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম-আল-হোসেন বলেন, ‘৫০৯টি উপজেলার প্রত্যেক উপজেলা থেকে একজন পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল। এটা প্রস্তাব ছিল ৫০০ জনের। পরিকল্পনা কমিশন দুটি টিমে যাওয়ার বিষয়ে সুপারিশ করেছে। এই দুই টিমে ২০ বা ৩০ জন যেতে পারে। একনেকে যখন অনুমোদন হবে তখন প্রতিটি বিষয় আমাদের বিশ্লেষণ করে ব্যাখ্যা দিতে হবে। তারা আমাদের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হলেই অনুমোদন দেবে।’