বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গৃহবন্দি অবস্থায় দলের চেয়ারপারসনকে মুক্ত করতে দেশে-বিদেশে জনমত তৈরিতে কাজ করছে বিএনপি। তিনি বলেন, শ্রমজীবী মানুষের আয় কমে যাওয়ায় তারা দুঃখকষ্টে দিন অতিবাহিত করছেন।
সরকার যে উন্নয়নের কথা বলছে, এটি সঠিক নয়। কথিত উন্নয়নের সুবিধা চলে যাচ্ছে একশ্রেণির মানুষের কাছে।
বুধবার সকাল ১০টায় ঠাকুরগাঁওয়ের তাঁতিপাড়ার পৈতৃক বাসভবনে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
শারদীয় দুর্গোৎসবে দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে ধনী-গরিবের বৈষম্য বেড়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অবশ্যই গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। তাকে মুক্ত করতে দেশে-বিদেশে জনমত তৈরিতে কাজ করছে বিএনপি।
তিনি বলেন, করোনা এবং সরকারের দ্বৈতনীতির কারণে ধনীরা আরও ধনী হচ্ছেন, গরিব মানুষ আরও গরিব হচ্ছেন। শ্রমজীবী মানুষের আয় কমে যাওয়ায় তারা দুঃখকষ্টে দিন অতিবাহিত করছেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার যে উন্নয়নের কথা বলছে, এটি সঠিক নয়। কথিত উন্নয়নের সুবিধা চলে যাচ্ছে একশ্রেণির মানুষের কাছে। ইতিমধ্যে গার্মেন্টস খাতে প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। এ নিয়ে সরকার ধূম্রজাল সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ফখরুল বলেন, দেশ-বিদেশের পত্রপত্রিকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে। দেশের মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে এ সরকার। মানুষ তার ন্যূনতম মৌলিক অধিকার পাচ্ছে না। আইসিটি বা তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা দিয়ে কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিক কাজল এ কারণে মুক্ত হতে পারছেন না। সংবাদমাধ্যমগুলোতে সরকার সেন্সরশিপ জারি করে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে মুক্ত সাংবাদিকতা বলে কিছু নেই।
তিনি ইহুদি নিধনের ইতিহাস তুলে ধরেন বলেন, হিটলার ইহুদিদের ধরে নিয়ে যখন হত্যা করছিল, তখন কমিউস্টিরা বলে ওঠে এত ইহুদিদের হত্যা করা হচ্ছে। কমিউনিস্টদের যখন হত্যা করা হচ্ছিল, তখন সাংবাদিকরা বলছিলেন– এবার কমিউনিস্টদের হত্যা করা হচ্ছে। এর পর যখন সাংবাদিকদের ধরে নিয়ে হত্যা করছিল হিটলার, তখন সাধারণ মানুষের পক্ষে বলার আর কেউ ছিল না। বতর্মান এ অবস্থার দিকে এগোচ্ছে দেশ। প্রতিবাদ করলে সরকারের সন্ত্রাসীরা হামলা করছে। সরকার গুণ্ডা পালছে নিজেদের অস্তিত টিকিয়ে রাখতে।
ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিত প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নির্বাচন কমিশন ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের যেতে উদ্বুদ্ধ করে। ভোটকেন্দ্রে ভোট দিয়ে জনগণ যেন নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন; তার পাহারার ব্যবস্থা করে সরকার। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার তার উল্টোটা করছেন। ভয়ভীতি প্রদর্শন করে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে প্রহসনের নির্বাচনের আয়োজন করছে তারা। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আবারও সেই দৃশ্য দেখেছেন দেশের মানুষ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নূর প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তার ক্রিয়েটিভ আইডিয়া রয়েছে। তাকে বিএনপি পৃষ্ঠপোষকতা করে না। তবে সে সত্য কথা বলে। যে কেউ সত্য কথা বললে তাকে সমর্থন করা হয়। বরং সরকারই পৃষ্ঠপোষকতা করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ঠাকুরগাঁও পৌরসভার মেয়র মির্জা ফয়সল আমীন, দফতার সম্পাদক মামুন-উর রশিদ, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ, ঠাকুরগাঁও পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আতাউর রহমান, মোটর পরিবহন শ্রমিক নেতা আবদুল জব্বার, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন তুহিন প্রমুখ।