আওয়ামী লীগ সরকার দ্বিমুখী ও ষড়যন্ত্রমূলক আচরণ করছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলো সচল রেখে ফরমায়েশি রায় প্রদানের মাধ্যমে মূলত সরকার ১/১১’র বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের পথেই হাঁটছে।
মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের মুক্তি দাবি করে দলটির মহাসচিব বলেন, ১/১১’র জরুরি অবস্থার অনৈতিক সরকার দেশকে বিরাজনীতিকরণের অংশ হিসেবে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দায়ের করে। এরই অংশ হিসেবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন ও তার ছেলে ব্যারিস্টার মীর হেলালের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। সে সময় অন্যায়ভাবে তাদেরকে আটকও করা হয়।
আরও বলা হয়, রমামলা চলাকালে তাদের আইনজীবীরা আইনগতভাবে মামলা মোকাবেলা করলেও কোনো বক্তব্য আমলে না নিয়ে সরকারি নীল নকশা অনুযায়ী একতরফা রায় ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীকালে উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়। কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসকে ব্যবহার করে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মীর নাসির ও মীর হেলালের আপিলের তীব্র প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। যা ১/১১’র জরুরি অবস্থার অনৈতিক সরকারের ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকার বিএনপি নেতাদেরকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনারই অংশ। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিন মঙ্গলবার আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
এদিকে আরেক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়’ এর নাম পরিবর্তনের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাসহ বীরত্বপূর্ণ, গৌরবোজ্জল ও সাহসী ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে ২০০৬ সালে ঢাকার তৎকালীন মেয়র মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে পুরাতন ঢাকার মালিটোলায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নামে ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বর্তমান সরকারের ইতিহাস বিকৃতি ও প্রতিহিংসার রাজনীতির বশবর্তী হয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ওই বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের ন্যক্কারজনক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বর্তমান হিংসাপরায়ণ সরকারের প্রতিহিংসার আগুন যেন কোনোভাবেই থামছেই না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ কর্তৃক দেশের সঠিক ইতিহাস নিশ্চিহ্ন করার ঘৃণ্য পাঁয়তারা ও ষড়যন্ত্র অব্যাহত গতিতে চলমান রয়েছে। সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের নামে বিভিন্ন স্থাপনা থেকে তার নাম মুছে ফেলাসহ দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও কুৎসা রটনার মধ্য দিয়ে আওয়ামী অবৈধ সরকারের প্রতিহিংসাপরায়ণ চেহারা জনগণের কাছে ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এদেশের একজন সফল রাষ্ট্রপতি ছিলেন, আর এটিই আওয়ামী লীগের অন্তরজ্বালা। তাই আওয়ামী লীগ সরকার একের পর এক বিভিন্ন স্থাপনা থেকে শহীদ জিয়ার নাম মুছে দেয়ার মাস্টারপ্ল্যানের অংশ হিসেবেই পুরাতন ঢাকার মালিটোলায় অবস্থিত ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়’ এর নাম পরিবর্তন করেছে। প্রতিহিংসার জ্বালা মেটাতে এই ঘটনা ধারাবাহিকতা। কিন্তু শত চেষ্টা করলেও বাংলাদেশের জনগণের হৃদয় থেকে শহীদ জিয়ার নাম মুছে দেয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। শহীদ জিয়া তার অমর কৃতিত্বের জন্য মানুষের মাঝে চিরকাল বেঁচে থাকবেন। অবিলম্বে পুরাতন ঢাকার মালিটোলায় অবস্থিত ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়’ এর নাম পুনঃস্থাপনের আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।