গঠনমূলক সমালোচনা হচ্ছে ‘বিউটি অব ডেমোক্রেসি’: তথ্যমন্ত্রী

গঠনমূলক সমালোচনাকে ‘বিউটি অব ডেমোক্রেসি’ বলে উল্লেখ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘সমালোচনা না থাকলে গণতন্ত্র ও গণতন্ত্রের সৌন্দর্য নষ্ট হয়।

মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

টেলিভিশনের টক-শোগুলো শুনুন, সেখানে সরকারকে কি ভাষায় সমালোচনা করা হয়। আমরা মনে করি, এই সমালোচনা থাকতে হবে। গঠনমূলক সমালোচনা হচ্ছে বিউটি অব ডেমোক্রেসি এবং সেই সমালোচনাকে সমাদৃত করার মানসিকতা থাকতে হয়।’

বিএনপি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেখবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সকালবেলা কড়া ভাষায় সরকারের সমালোচনা করেন, আবার সেটার সাথে প্রতিযোগিতা করে দুপুরে রিজভী আহমেদ আরেকটি সংবাদ সম্মেলন করে আরো কড়া ভাষায় সরকারের সমালোচনা করেন। পাশাপাশি প্রেসক্লাবে গিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় কিংবা অন্য কেউ আরেকবার বক্তৃতা দিয়ে বলেন, আমাদের কথা বলার কোন অধিকার নাই। বিএনপি নেতারা সারাদিন সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে সন্ধ্যায় বলেন আমাদের কথা বলার অধিকার নেই।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমালোচনাকে সমাদৃত করার সংস্কৃতি লালন করেন উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যখন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলাম, তখন যে পত্রিকা প্রথম পাতায় ব্যঙ্গ করে আমার কার্টুন ছাপিয়েছিল, সে পত্রিকাকেই জাতীয় পরিবেশ পদক দেয়ার জন্য আমি নিজেই নাম প্রস্তাব করেছিলাম এবং তারা পেয়েছিল। কারণ আমরা মনে করি দায়িত্বে থাকলে সমালোচনা হবে এবং সেই সমালোচনা সহ্য করার মানসিকতা দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীদের থাকতে হয়। না হয় বহুমাত্রিক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে না।’

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি দেশে কিংবা পৃথিবীতে যখন কোন সঙ্কটময় পরিস্থিতি তৈরি হয় তখন একটি মহল সেটিকে কাজে লাগিয়ে গুজব রটিয়ে মিথ্যা সংবাদ দিয়ে সমাজে অস্থিরতা, ভয়ভীতির সঞ্চার করতে ওঁৎ পেতে থাকে। করোনাকালের শুরুতেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু গুজব ও মিথ্যা সংবাদের বিরুদ্ধে মূলধারার গণমাধ্যমের যত্নশীলতা ও কঠোরতার কারণে এই করোনাকালে গুজব কিংবা মিথ্যা সংবাদ খুব বেশি কাজে আসেনি। এজন্য গণমাধ্যমের সাথে যুক্তদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’

রাত বারোটার পরের টক-শো শুনলে মনে হবে, দেশে কোন কাজই হচ্ছে না, কিন্তু বাস্তবতাটা হচ্ছে ব্লুমবার্গ প্রতিবেদন বলছে, করোনা মোকাবিলায় এই সর্বোচ্চ জনঘনত্ব আর মাথাপিছু সর্বনিম্ন কৃষিজমির দেশ বাংলাদেশের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ায় সবার ওপরে এবং পুরো বিশ্বে ২০তম, জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, অবশ্যই সমালোচনা হবে, সমালোচনা থাকবে, এটির পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসাও দরকার। না হয় রাষ্ট্র ও সমাজ এগুবে না।

এসময় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে তার বহুদিনের জানাশোনা এবং হৃদয়ের সম্পর্ক উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী প্রেসক্লাব সদস্যদের বলেন, ‘আমার হৃদয়ে আপনাদের স্থান সবসময় ছিল এবং থাকবে, আমি আশা করবো আপনাদের হৃদয়েও আমাকে স্থান দেবেন।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাসের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ। প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতিদের মধ্যে আবু সুফিয়ান ও কলিম সরওয়ার, সহসভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজা, বিএফইউজে’র সহসভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলী প্রমুখ এসময় বক্তব্য রাখেন।